ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সান্তাহারে ভিজিএফ চালের গুদাম সিল, বিতরণ তালিকা জব্দ

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ৫ জুলাই ২০১৬

সান্তাহারে ভিজিএফ চালের গুদাম সিল, বিতরণ তালিকা জব্দ

নিজস্ব সংবাদদাতা, সান্তাহার ॥ ভিজিএফের চাল বিতরণে ওজনে কম দিয়ে উদ্বৃত্ত করা বিপুল পরিমান চালের কিছু অংশ পাচার এবং পাচারের জন্য মজুদ রাখা অবশিষ্ট চালের গুদাম সিল এবং বিতরণ তালিকা জব্দ করেছে উপজেলা ত্রান কর্মকর্তা। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার রাতে বগুড়ার সান্তাহার পৌর সভায়। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বগুড়ার সান্তাহার পৌরসভার ৩ হাজার ১৮০ সুবিধাভোগীর মধ্যে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বরাদ্দ করা ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়। চাল বিতরণ করার সময়ই ৫ ভ্যানে করে প্রায় ২৫/৩০ বস্তা চাল পাচার করা হয়। এসময় পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাজিমউদ্দিন খান বাচ্চু বাধা দিলেও পৌরসভার কর বিভাগের কর্মচারি আওয়ামীলীগ নেতা বিকাশ চন্দ্রের হস্তক্ষেপে চাল পাচার ঠেকাতে ব্যর্থ হন বলে জানিয়েছেন ওই কাউন্সিলর এবং ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর-প্যানেল মেয়র জার্সিস আলম রতন সহ একাধিক কাউন্সিলর এবং পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কাসেম। তারা জানান, সরকার জনপ্রতি ২০ কেজি করে ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দিলেও বিতরণের সময় ৩/৪ কেজি করে চাল কম দেওয়া হয়। এছাড়াও একজনের কার্ডের চাল ভাগ করে দেওয়া হয় ২জনকে। পক্ষান্তরে চাল বিতরনের সময় ওজনযন্ত্র হিসাবে দাঁড়িপাল্লা বা ডিজিটাল স্কেল কোনটাই ব্যবহার না করে ‘বালতি মাপ’ দেওয়ারও অভিযোগ মিলেছে। তাঁরা আরো জানান, তালিকাভুক্ত সকল সুবিধাভোগীদের চাল দেবার পরও তালিকার বাহিরে ৫০/৬০ দুঃস্থ এবং মাস্টাররোলে কর্মরত ১১৫ পৌর কর্মীকেও চাল দেওয়া হয়। এর পরও উদ্বৃত্ত থেকে যায় ৫৫ বস্তা চাল। ঘটনাটি রহসজনক। বিষয়টি নিশ্চিত হবার পর পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল কাসেম সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিলে ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম লিখিত অভিযোগ আমলে নিয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে উপজেলা ত্রান কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে দেন। উপজেলা ত্রান কর্মকর্তা আবু হেলাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় সান্তাহার পৌর সভায় আসেন। তিনি অভিযোগকারি এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টুর নিকট থেকে ভিজিএফ বিতরণ তালিকা বা মাস্টাররোল জব্দ করেন। এসময় তালিকাভুক্ত ১১৫ জন সুবিধাভোগী চাল বিতরনের দিন হাজির না থাকার তথ্য মেলে। সে হিসাবে ৪৬ বস্তা চাল মজুদ থাকার কথা থাকলেও গুদামে মেলে ৫৫ বস্তা চাল। পরে গুদাম হিসাবে ব্যবহার করা পৌর সভার ১০৮ নং কক্ষ সিল করেন ত্রান কর্মকর্তা আবু হেলাল। তিনি জানান, ঈদের ছুটির পর ব্যাপক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বিতরণের সময় প্রায় ৩০ মন চাল পাচার, তালিকার বাহিরে প্রায় ১৭০জনকে প্রায় সাড়ে ৩ মেট্্িরক টন চাল দেওয়ার পরও চাল উদ্বৃত্ত থাকা বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি মেয়র ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু।
×