
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমানে জাতিসংঘের স্বীকৃত দেশ রয়েছে ১৯৩টি, যার মধ্যে ৫৭টি দেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ। এছাড়া ভ্যাটিকান সিটি ও ফিলিস্তিন নামক দুইটি পর্যবেক্ষক দেশও রয়েছে জাতিসংঘের তালিকায়। বিশ্বজুড়ে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কোটি কোটি মানুষের বসবাস থাকলেও মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ২০০ কোটিরও বেশি।
ধারণা করা হয়, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই কমবেশি মুসলমানের উপস্থিতি রয়েছে। তবে এই ধারণাটি খণ্ডিত হয়েছে কিছু দেশে গিয়ে। কারণ, এমন কিছু দেশ রয়েছে যেখানে মুসলমানদের প্রবেশ নিষিদ্ধ, নেই কোনো মসজিদ, এমনকি ইসলাম প্রচারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কোথাও কোথাও ইসলাম ধর্ম প্রচার করলে শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হয়।
এসব ইসলামবিরোধী দেশের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে ভ্যাটিকান সিটি। এটি বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে কোনো মুসলমান বাস করে না। ইতালির রাজধানী রোমের কাছে অবস্থিত এই দেশটি খ্রিস্টানদের জন্য ধর্মীয় কেন্দ্র। প্রায় ৮০০ জনসংখ্যার এই ক্ষুদ্রতম রাষ্ট্রে মুসলমানদের প্রবেশ কিংবা বসবাস পুরোপুরি নিষিদ্ধ এবং এটি পুরোপুরি একটি ধর্মীয় এলাকা হিসেবে বিবেচিত।
তালিকার দ্বিতীয় দেশ সলোমন দ্বীপপুঞ্জ। এখানকার জনসংখ্যা প্রায় ৭ লাখ হলেও মুসলমানের সংখ্যা ৭০-এরও নিচে। ১৯৯৫ সালে তাবলিগ জামাতের মাধ্যমে কিছু মানুষ ইসলাম গ্রহণ করলেও বর্তমানে এখানে ইসলামের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। দেশটিতে একটি মাত্র ছোট মসজিদ থাকলেও সেটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রায়ই বিক্ষোভ হয়।
উত্তর কোরিয়া হলো আরেকটি দেশ যেখানে ইসলামসহ যে কোনো ধর্ম পালনে রয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। দেশটিতে কোনো মসজিদ, গির্জা বা মন্দির নির্মাণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এক সময় দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার ছিল, কিন্তু বর্তমানে তা প্রায় শূন্য। অনেকে দেশ ছেড়ে চলে গেছে, কেউ কেউ নিখোঁজ বা নিহত হয়েছে। দেশটির নেতা কিম জং উন নাস্তিকতাবাদে বিশ্বাসী এবং ইসলাম প্রচার করলে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।
স্লোভাকিয়া হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে আজ পর্যন্ত কোনো মসজিদ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। মুসলমানরা এখানে মসজিদ তৈরি করতে পারে না, মাদ্রাসা চালাতে পারে না। অথচ এই দেশ এক সময় অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল এবং মুসলমানদের শাসনাধীনে প্রায় ৩০০ বছর ছিল। এমনকি প্রথম হাসপাতালও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মুসলিম শাসকদের আমলে। বর্তমানে দেশটিতে মুসলিম জনসংখ্যা খুবই নগণ্য এবং মুসলমানদের ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এই দেশগুলো বিশ্বে ধর্মীয় স্বাধীনতার চিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। ইসলাম শান্তির ধর্ম হলেও কিছু দেশে মুসলিমদের অস্তিত্বই অস্বীকার করা হচ্ছে বা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
ছামিয়া