ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২

এসি থেকে নয়, দুর্নীতির নথি পোড়া তেই বিয়াম ভবনে আগুন দেয়া হয়: পিবিআই

প্রকাশিত: ২১:১৯, ২৮ জুলাই ২০২৫

এসি থেকে নয়, দুর্নীতির নথি পোড়া তেই বিয়াম ভবনে আগুন দেয়া হয়: পিবিআই

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর হাতিরঝিলে বিয়াম ফাউন্ডেশনের অগ্নিকাণ্ড কোনও দুর্ঘটনা ছিল না, বরং পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অফিসের দুর্নীতির গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেওয়া। পিবিআই-এর তদন্তে উঠে এসেছে, প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামের নির্দেশে অফিস সহায়ক আব্দুল মালেক ও গাড়িচালক ফারুক একটি বদ্ধ এসি রুমে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেন। আগুন লাগানোর সময় হঠাৎ একটি বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে ঘটনাস্থলেই আব্দুল মালেক নিহত হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফারুকের মৃত্যু হয়। সিসিটিভি ফুটেজ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশ্লেষণের মাধ্যমে এসব তথ্য প্রকাশ করে পিবিআই।

 

 

পিবিআই জানায়, এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ড জাহিদুল ইসলাম তার পূর্বপরিচিত আশরাফুল ইসলামকে ব্যবহার করে পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। তাদের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোয়েন্দারা বলছেন, অফিসের রুমটি ছিল একটি ছোট, বদ্ধ এবং এসি-চালিত কক্ষ। পেট্রোল ঢালার ফলে ঘরের ওপরে দাহ্য গ্যাস জমে গিয়েছিল, যা আগুন লাগাতেই ভয়াবহ বিস্ফোরণে রূপ নেয়। যদি এসি বিস্ফোরণের কারণ হতো, তাহলে এসির ইনডোর ইউনিটের মুখ ক্ষতিগ্রস্ত হতো, কিন্তু সেটি অক্ষত থাকায় বোঝা গেছে এটি এসি বিস্ফোরণ ছিল না।

পিবিআই আরও জানায়, নথিপত্র ধ্বংস করে আর্থিক লেনদেন গোপন করাই ছিল প্রধান উদ্দেশ্য, যা অনেক দিনের পরিকল্পনার অংশ। কোন একটি আর্থিক অনিয়ম বা “ডিসক্রিপেন্সি” উত্থাপনের পর থেকেই জাহিদুল ইসলাম এই পরিকল্পনা করেন। এই অনিয়ম কবে কীভাবে উত্থাপিত হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

 

 

তদন্তে জানা গেছে, জাহিদুল ইসলাম ও আশরাফুল ইসলাম একই জেলার এবং পূর্বপরিচিত ছিলেন। আশরাফ ঢাকায় থাকতেন, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই জাহিদ এই কাজটি করান। গোয়েন্দারা বলছেন, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা এবং এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে কারা লাভবান হয়েছে—এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করলেই ঘটনার আরও গভীর লিংক বেরিয়ে আসবে।

ছামিয়া

×