ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২

আফিয়া সিদ্দিকীকে জাতির কন্যা ঘোষণা করলো পাকিস্তান

প্রকাশিত: ১৮:৫৪, ২৮ জুলাই ২০২৫

আফিয়া সিদ্দিকীকে জাতির কন্যা ঘোষণা করলো পাকিস্তান

ছবি: সংগৃহীত

আফিয়া সিদ্দিকী—একটি নাম যা আজও পাকিস্তানের আকাশে ভেসে বেড়ায় বেদনার মেঘ হয়ে। বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে নিউরোসায়েন্সে ডিগ্রি অর্জনকারী, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গবেষণায় স্বীকৃত একজন মেধাবী কন্যা, কোরআনে হাফেজা—যার স্বপ্ন ছিল জ্ঞান দিয়ে সমাজ বদলে দেওয়া। সেই আফিয়া আজ যুক্তরাষ্ট্রের এক কারাগারে বন্দি।

২০০৩ সালে তিনি নিখোঁজ হন। এরপর দীর্ঘ পাঁচ বছর তার কোনো খোঁজ মেলেনি। অবশেষে ২০০৮ সালে তাকে আফগানিস্তানের গাজনি শহরে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে মার্কিন সেনাদের ওপর হামলার চেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের আদালত তাকে ৮৬ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।

 

 

কিন্তু এই বিচারে ন্যায়বিচার কতটা পরিপূর্ণ ছিল, তা নিয়ে রয়েছে ব্যাপক প্রশ্ন। আদালতের ভাষ্য আর ঘটনাপ্রবাহের বাস্তবতার মধ্যে ছিল বিস্তর ফারাক। অনেকে মনে করেন, তিনি রাজনৈতিক ও সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধের এক বলি। কেউ আবার বলেন, তার আসল অপরাধ ছিল একজন মুসলিম নারী বিজ্ঞানী হওয়া।

এক সময়ের গর্বিত মেধাবী আফিয়া সিদ্দিকী আজ শুধুই একটি কয়েদি নাম্বার। জাতি আজও ভুলে যায়নি তার ছোট ছোট সন্তানদের, যারা আজও মায়ের কোল ফিরে পাওয়ার আশায় দিন গুনছে।

 

 

 

সম্প্রতি নিউইয়র্কে প্রবাসী পাকিস্তানিদের এক সমাবেশে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, “ডাক্তার আফিয়া সিদ্দিকী আমাদের জাতির কন্যা। তার মুক্তি এখনো আমাদের জাতীয় অগ্রাধিকার।” তিনি আরও জানান, আফিয়ার মুক্তির জন্য পাকিস্তান সরকার আন্তরিক ও মরিয়া প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসহাক দারের এই বক্তব্য এখনই হয়তো আফিয়ার মুক্তির দরজা খুলে দেবে না, তবে এটি নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের মানবিক মূল্যবোধের এক প্রতিচ্ছবি।

আফিয়ার গল্প কেবল একজন নারীর নয়। এটি একজন মা, একজন কন্যা, একজন মুসলিম নারীর মুক্তির আহ্বান। এটি একটি জাতির বিবেকের প্রশ্ন—ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতিফলন।

আজ গোটা জাতি, এমনকি মুসলিম বিশ্ব, প্রার্থনা করছে—আফিয়ার জন্য মুক্তি আসুক, সুবিচার আসুক।

ছামিয়া

×