ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রতি যে বার্তা দিলেন কিম জং উনের বোন

প্রকাশিত: ০২:২৪, ২৯ জুলাই ২০২৫

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রতি যে বার্তা দিলেন কিম জং উনের বোন

ছবি: সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতা কিম জং উনের প্রভাবশালী বোন কিম ইয়ো জং দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন উদারপন্থী সরকারের কূটনৈতিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। সোমবার (২৮ জুলাই) রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ‘অন্ধ আস্থায়’ এবং উত্তর কোরিয়ার প্রতি বৈরিতায় কোনো পার্থক্য দেখাচ্ছে না তাদের রক্ষণশীল পূর্বসূরীদের সঙ্গে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করায় ব্যস্ত উত্তর কোরিয়া সিউল বা ওয়াশিংটনের সঙ্গে কূটনৈতিক সংলাপে ফিরে আসার আগ্রহ দেখাচ্ছে না। বরং দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ফাটল ধরানোই এখন কিম ইয়ো জংয়ের মূল লক্ষ্য।

তিনি বলেন, ‘সিউলে যেকোনো ধরনের নীতি গ্রহণ কিংবা প্রস্তাব আসুক না কেন, আমরা তা নিয়ে আগ্রহী নই। আলোচনার জন্য কোনো প্রয়োজন বা যৌক্তিকতাও নেই।’

দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ংয়ের নেতৃত্বাধীন সরকার গত জুনে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের আশ্বাস দিয়েছিল। এর আওতায় তারা সীমান্তে লাউডস্পিকার সম্প্রচার বন্ধ করে, প্রচারপত্র বিলির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং আগত উত্তর কোরীয় নাগরিকদের ফেরত পাঠায়।

কিন্তু উত্তর কোরিয়ার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়াগুলো ‘আক্রমণের মহড়া’ হিসেবে চালানো হচ্ছে। এ নিয়ে তারা বেশ কয়েকবার বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং সোমবার পুনরায় জানান, কোরিয়া উপদ্বীপে পারস্পরিক আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন সবচেয়ে জরুরি। তিনি ঐক্য মন্ত্রী চুং দোং-ইয়ংকে আহ্বান জানান উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক বিবৃতি নিয়ে পর্যালোচনার জন্য। মন্ত্রী চুং পরে বলেন, তিনি লিকে প্রস্তাব দেবেন যে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথ সামরিক মহড়া ‘সমন্বয়’ করতে পারেযা হয়তো আলোচনায় ফিরতে পিয়ংইয়ংকে উৎসাহিত করবে।

তবে বিশ্লেষক মুন সিয়ং মুক বলেন, কিম ইয়ো জংয়ের এই বক্তব্য স্পষ্ট করে যে, উত্তর কোরিয়া চায় দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোট ভেঙে দিক। কারণ অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলো পুনরায় চালু না হওয়া পর্যন্ত তারা আলোচনায় ফিরে আসবে না।

এদিকে, উত্তর কোরিয়া বর্তমানে রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বাড়িয়েছেইউক্রেন যুদ্ধে সেনা ও অস্ত্র সরবরাহ করে এবং এর বিনিময়ে অর্থনৈতিক সুবিধা পাচ্ছে বলে ধারণা। তবে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক ওয়ান কোরিয়া সেন্টারের প্রধান কওয়াক গিল সাপ বলেন, রাশিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ার পাওয়ার সুযোগ সীমিত। তাই আগামী জানুয়ারিতে শাসক দল ওয়ার্কার্স পার্টির এক বড় সম্মেলনে উত্তর কোরিয়া দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে নতুন পরিকল্পনা (প্ল্যান বি ও প্ল্যান সি) তৈরি করতে পারে।

ইওয়া উইমেন্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লাইফ-এরিক ইজলি বলেন, ‘কিম ইয়ো জংয়ের বিবৃতি মূলত অভ্যন্তরীণ শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে। এতে জাতীয় অহংবোধ জোরদার করার চেষ্টা আছেযা পিয়ংইয়ংয়ের অস্ত্র কার্যক্রমকে ন্যায্যতা দেওয়ার পাশাপাশি ওয়াশিংটন-সিউলের সম্পর্কেও সন্দেহ সৃষ্টি করতে চায়।’

 

সূত্র: এপি।

রাকিব

×