
ছবি: সংগৃহীত
সম্পর্ক তৈরি করা যত কঠিন, তা টিকিয়ে রাখা তার চেয়েও বেশি চ্যালেঞ্জিং। প্রতিটি সম্পর্কেরই ভিত্তি হলো বিশ্বাস, সম্মান, বোঝাপড়া এবং কার্যকর যোগাযোগ। কিন্তু অজান্তেই আমরা কিছু অভ্যাস গড়ে তুলি, যা ধীরে ধীরে একটি মজবুত সম্পর্ককেও দুর্বল করে দেয় এবং একসময় ভাঙনের মুখে ঠেলে দেয়। এই অভ্যাসগুলো প্রায়শই এতটাই সূক্ষ্ম হয় যে, আমরা নিজেরাই বুঝতে পারি না যে এগুলো কীভাবে আমাদের ভালোবাসার মানুষটির থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন ৫টি সাধারণ অভ্যাস সম্পর্কে, যা আপনার সম্পর্ককে নষ্ট করে দিচ্ছে এবং যা আজই শুধরে নেওয়া উচিত:
১. কার্যকর যোগাযোগের অভাব (Lack of Effective Communication)
কেন ক্ষতি করে: সম্পর্কের ক্ষেত্রে কার্যকর যোগাযোগ হলো মেরুদণ্ডের মতো। যখন দম্পতিরা একে অপরের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলা বন্ধ করে দেন, নিজেদের অনুভূতি, চাহিদা বা উদ্বেগ প্রকাশ করেন না, তখন ভুল বোঝাবুঝি বাড়ে। নীরবতা বা অনুমান নির্ভরতা সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে। মনে হতে পারে, অপরজন তো সব বুঝতেই পারছে, কিন্তু বাস্তবে তা হয় না।
কীভাবে শুধরাবেন: প্রতিদিন সঙ্গীর সঙ্গে কথা বলার জন্য নির্দিষ্ট সময় বের করুন। হতে পারে সেটা রাতের খাবার খাওয়ার সময় বা ঘুমানোর আগে। মন খুলে কথা বলুন, সঙ্গীর কথা শুনুন এবং তাকে বিচার না করে বোঝার চেষ্টা করুন। সমস্যা হলে সরাসরি আলোচনা করুন, অনুমানের ওপর নির্ভর করবেন না।
২. সঙ্গীকে ছোট করা বা অসম্মান করা (Disrespect or Belittling)
কেন ক্ষতি করে: যেকোনো সম্পর্কে সম্মান অপরিহার্য। সঙ্গীকে ঠাট্টা করা, জনসমক্ষে ছোট করা, তার অনুভূতিকে অবহেলা করা বা তার সিদ্ধান্তকে হেয় করা সম্পর্কের মূল স্তম্ভকে ভেঙে দেয়। এমনকি ছোটখাটো নেতিবাচক মন্তব্যও সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কের ফাটল তৈরি করে।
কীভাবে শুধরাবেন: সঙ্গীর প্রতি সব সময় শ্রদ্ধাশীল থাকুন। তার মতামতকে গুরুত্ব দিন, এমনকি যদি আপনি একমত নাও হন। প্রকাশ্য বা ব্যক্তিগতভাবে তাকে অপমান করা থেকে বিরত থাকুন। একে অপরের শক্তি ও দুর্বলতাকে সম্মান করুন।
৩. দোষারোপ করা এবং দায়িত্ব না নেওয়া (Blaming and Avoiding Responsibility)
কেন ক্ষতি করে: যখন কোনো সমস্যা হয়, তখন নিজেদের ভুল না দেখে সব দোষ সঙ্গীর ওপর চাপিয়ে দেওয়া সম্পর্কের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এতে সম্পর্কের মধ্যে তিক্ততা বাড়ে এবং সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে আরও জটিল হয়। কেউ যদি নিজের ভুল স্বীকার করতে না চান, তাহলে সম্পর্কের উন্নতি হয় না।
কীভাবে শুধরাবেন: যেকোনো সমস্যায় নিজের ভূমিকা কী ছিল, তা নিয়ে ভাবুন। নিজের ভুলের দায়িত্ব নিন এবং স্বীকার করুন। একে অপরের ওপর দোষ না চাপিয়ে, একসঙ্গে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করুন। ক্ষমা চাওয়া এবং ক্ষমা করা—উভয়ই সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সম্পর্ককে সুস্থ ও মজবুত রাখতে হলে এই অভ্যাসগুলো চিহ্নিত করা এবং তা শুধরে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। ছোট ছোট এই পরিবর্তনগুলো আপনার সম্পর্কের প্রতি নতুন করে জীবন সঞ্চার করতে পারে। আজই আপনার সম্পর্কের প্রতি আরেকটু যত্নশীল হোন এবং একটি দীর্ঘস্থায়ী, সুখী সম্পর্ক গড়ে তুলুন।
ফারুক