ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২

ঢাকায় ঘোড়সওয়ার প্রশিক্ষণকেন্দ্র: শহরের বুকে নতুন এক চর্চা

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ২৯ জুলাই ২০২৫

ঢাকায় ঘোড়সওয়ার প্রশিক্ষণকেন্দ্র: শহরের বুকে নতুন এক চর্চা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার যানজট, কংক্রিট আর দমবন্ধ করা জনজীবনের মাঝেও এক নতুন ধারা গড়ে উঠছে—ঘোড়সওয়ারি। কখনো শখ, কখনো থেরাপি, আবার কখনো পেশাদার খেলার প্রস্তুতি—নানা রূপে নগরজীবনে জায়গা করে নিচ্ছে এই ব্যতিক্রমী চর্চা।

শহরের একাধিক প্রান্তে এখন দেখা মিলছে হেলমেট পরা তরুণ-তরুণীদের ঘোড়ার পিঠে দাপিয়ে বেড়ানোর দৃশ্য। কেউ কেউ বলছেন, এটি আর বিলাসিতা নয়—এ এক জীবনধারা।

শহরের বুকে নতুন এক খেলার চর্চা

ঘোড়সওয়ার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (HRTC) প্রতিষ্ঠাতা মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু খেলা নয়, এটা শরীর ও মনের চর্চা। তরুণরা এখানে এসে আত্মবিশ্বাস ও মনোযোগ বাড়াতে পারছে।’

সূত্র: সংগৃহীত

তার ভাষ্য অনুযায়ী, এটি শরীরচর্চার পাশাপাশি ইমিউনিটি বাড়ায়, মনোসংযোগ উন্নত করে এবং তরুণদের মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি দেয়।

একইভাবে, নতুন প্রজন্মের আরও একটি প্রতিষ্ঠান ‘বুরাক হর্স রাইডিং স্কুল’-এর প্রতিষ্ঠাতা সাদাত উজ্জ্বল জানান, ‘২০২৩ সালে শুরু করি। জায়গা পাওয়া, ঘোড়ার চিকিৎসা, রক্ষণাবেক্ষণ সবই চ্যালেঞ্জ, তবুও আমরা থেমে যাইনি।’

শুধু শখ নয়, পেশাদার স্বপ্নও

এই ঘোড়সওয়ারির ভবিষ্যৎ কেমন? ইসলাম বলেন, ‘আমি চাই এটা অলিম্পিক পর্যায়ে যাক। টেন্ট পেগিং বা ড্রেসাজের মতো খেলা তো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।’

বুরাক স্কুলে এখন পর্যন্ত ৩৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কেউ কেউ বিদেশে এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে চাকরির আবেদনও করেছেন।

তবে কেবল ক্রীড়া নয়, ঘোড়সওয়ারিকে থেরাপি বিনোদনের মাধ্যম হিসেবেও দেখছেন অনেক অভিভাবক ও তরুণ।

সূত্র: সংগৃহীত

বাংলাদেশে ঘোড়সওয়ারির পূর্ববর্তী কোনো জনপ্রিয়তা না থাকলেও, উদ্যোক্তারা বলছেন, এখন ধীরে ধীরে সংস্কৃতির জন্ম হচ্ছে।

‘আগে মানুষ জানতই না কোথায় ঘোড়ায় চড়তে শেখা যায়। এখন অন্তত একটা জায়গা তৈরি হয়েছে,’ বলেন জাহেদুল। এই পথে সবচেয়ে বড় সহায় ছিলেন তার বাবা মো. ফারুকুর রহমান।

ঢাকায় ঘোড়সওয়ারির এই ছোট উদ্যোগগুলো এখন কেবল খেলাধুলার ক্ষেত্রেই নয়, বরং বিকল্প জীবনচর্চার প্রতীক হয়ে উঠছে।

যেখানে প্রতিদিনের জীবন মানে ট্র্যাফিক জ্যাম আর দমবন্ধ বাস্তবতা, সেখানে একটি ঘোড়ার পিঠে উঠে একটু নিঃশ্বাস নেওয়াও যেন একধরনের মুক্তি।

রাকিব

×