
ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা-আখাউড়া উপজেলা সংযোগ সড়কের কসবা অংশের প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে অন্তত ৩ কিলোমিটার এখন খানাখন্দে ভরা। কসবা বাজার থেকে চাপিয়া পর্যন্ত সড়কটির অবস্থা এতটাই নাজুক যে, এটি দিয়ে চলাচল করা যেন দুঃস্বপ্নের নামান্তর। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন দুই উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। বিশেষ করে সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলোকে পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।অবস্থা এমন যে, রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া-আসাও হয়ে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন “রুরাল কানেক্টিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট’-এর অধীনে কসবা-আখাউড়া সড়কের কসবা অংশের ৭ কিলোমিটার এবং আখাউড়া অংশের ৪ কিলোমিটার সংস্কারে মোট ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়। কাজটি পান কিশোরগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মমিনুল হক।
টেন্ডার অনুযায়ী ২০২৪ সালের জুলাই মাসে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কসবা অংশে এখনো দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। ফলে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী ও এই পথে নিয়মিত যাতায়াতকারীরা।
কাজীয়াতলী গ্রামের অটোরিকশা চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ২ বছর ধরে এই সড়কটির বেহাল দশায় আমরা এখন বিপাকে আছি,বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী,অসুস্থ রোগী নিয়ে আমরা কসবায় আসতে পারি না,প্রশাসনের নিকট আবেদন করব,খুব দ্রুত যেন সড়কটির মেরামত করা হয়।
অপর এক অটোরিকশাচালক রুবেল মিয়া জানান,গতকালও এই ভাঙ্গা রাস্তার জন্য আমার গাড়িতে ৩ হাজার টাকার কাজ করানো লাগছে, রাস্তা ভাঙ্গা থাকায় আমরা গাড়ি নিয়ে আসতেও ভয় পাই। তাই সরকারের কাছে আবেদন করব,দ্রুত এটির মেরামত করা হোক।
এ সড়কে চলাচলকারী কলেজ শিক্ষক শামিম আহমেদ বলেন,কসবা আখাউড়া সড়কটিতে প্রচুর পরিমাণে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্ত হয়ে আছে,যার ফলে আমরা সাধারণ জনগণ নিদারুণ কষ্টে আছি। আমরা শুনেছি,অনেক আগেই রাস্তাটির মেরামত শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কেন রাস্তাটির কাজ শুরু হচ্ছেনা আমরা প্রশাসনের কাছে জবাব চাই।
কুমিল্লা সিসিএন ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া শিক্ষার্থী জনি মোল্লা বলেন, এই সড়কটি আমাদের চলাচলের একমাত্র সড়ক হওয়াতে বাধ্য হয়েই আমরা এই সড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে,তবে সড়কটি বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগীই বলা যায়, আমরা দ্রুত এ কষ্ট থেকে পরিত্রাণ চাচ্ছি।
উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে সড়কটি ২৫ এমএম ডেন্স কার্পেটিংয়ের মাধ্যমে আংশিক সংস্কার করা হয়েছিল। এরপর আর কোনো মেরামত হয়নি।
এ প্রসঙ্গে কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছামিউল ইসলাম বলেন, সড়কটির দুরবস্থা নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ সীমিত। বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও কাজ শুরু হয়নি, জেলার মিটিং এ ডিসি মহোদয়ের নজরে এনেছি বিষয়টি, আশা করছি একটি সমাধান পাওয়া যাবে।
সবমিলিয়ে খুব দ্রুত সড়কটির সংস্কার দেখতে চায় চলাচলকারী ও স্থানীয়রা।
মিরাজ খান