ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

নিউইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে মৌলভীবাজারের দিদারুল নিহত, বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

নিজস্ব সংবাদদাতা, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: ২৩:২২, ২৯ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২৩:২৭, ২৯ জুলাই ২০২৫

নিউইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে মৌলভীবাজারের দিদারুল নিহত, বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটানে একটি বহুতল ভবনে বন্দুকধারীর গুলিতে নিউইয়র্ক পুলিশের সদস্য বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত দিদারুল ইসলাম রতন নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার ২৮ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শেন তামুরা নামের এক যুবক এ হামলা চালান বলে জানা গেছে। হামলায় নিহতদের মধ্যে হামলাকারী শেন তামুরা ছাড়াও দুজন পুরুষ, একজন নারীও রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, চারজনকে গুলি করে হত্যার পর বন্দুকধারী নিজেও আত্মহত্যা করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিহত পুলিশ কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম রতন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের মাগুরা এলাকার বাসিন্দা। তাঁর পিতার নাম মো: আব্দুর রব ও মাতার নাম মিনারা বেগম। দিদারুলের দুই বোন রয়েছেন। তাদের নাম নাঈমা ও নাদিমা। দিদারুল প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে নিউইয়র্ক পুলিশে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছিলেন। তাঁর স্ত্রী এখন অন্তঃসত্ত্বা। ব্রঙ্কস বরোর পার্চেস্টার এলাকায় তিনি বসবাস করতেন। আর তাঁর কর্মস্থল ছিল ব্রঙ্কসের ৪৭ প্রিসন্ক্ট। ২৮ জুলাই সোমবার স্থানীয় সময় রাত ১টায় পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে দিদারুল ইসলামের মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয়। হামলায় দিদারুল নিহত হওয়ার খবর শুনে তাঁর বাবা আব্দুর রব হৃদরাগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তাঁকে ম্যানহাটানের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

২৯ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে মাগুরা এলাকায় নিহত দিদারুলের ফুফু তাহেরা বেগম দুলির সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, নিউইয়র্কে থাকা স্বজনদের মাধ্যমে সোমবার জানতে পারি আমার ভাইপো দিদারুল সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। তাঁর মৃত্যুতে আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। দিদারুল খুবই ভালো শান্তশিষ্ট ও মেধাবী ছেলে ছিল। তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যুতে নিউইয়র্কে থাকা দিদারুলের বাবা-মা, স্ত্রী ও বোনসহ অন্যান্য স্বজনরা তাকে হারিয়ে বিলাপ করছেন। 

দিদারুল গ্রামের বাড়ি বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের শিক্ষারমহল গ্রামে। তার বাবা আব্দুর রব একসময় মধ্যপ্রাচ্যর দেশ কুয়েত ছিলেন। প্রায় দুই যুগ আগে বড়লেখা থেকে কুলাউড়া পৌরসভার মাগুরা এলাকায় বাসা নির্মাণ করে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। বর্তমানে ওই বাসায় ভাড়াটে লোকজন বসবাস করছেন। 

তিনি আরো বলেন, ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে দিদারুলের মামার আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে আমেরিকায় পাড়ি জমায় দিদারুল। সেখানে গিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে নিউইয়র্ক পুলিশে যোগ দেয়। দেশে থাকাবস্থায় দিদারুল কুলাউড়া নবীন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও কুলাউড়া ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে।

কুলাউড়ার মাগুরা এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক নাজমুল বারী সোহেল বলেন, দিদারুল ইসলাম রতন ও আমার একই এলাকার বাসিন্দা। দেশে থাকাবস্থায় সে একজন ভালো খেলোয়াড় ছিল। প্রায় ১৬ বছর ধরে দিদারুল নিউইয়র্কে বসবাস করছে। সেখানে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হওয়ার খবর শুনে তাঁর বাসায় ছুটে আসি। তাঁর মর্মান্তিক মৃত্যুতে মাগুরাসহ কুলাউড়ার ক্রীড়াঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।  

 

রাজু

×