ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

শেরপুরে আদালতের আদেশে জমির দখল প্রদানকালে বাঁধা

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর

প্রকাশিত: ২৩:২১, ২৯ জুলাই ২০২৫

শেরপুরে আদালতের আদেশে জমির দখল প্রদানকালে বাঁধা

শেরপুরে দেওয়ানী আদালতের আদেশ মোতাবেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ডিক্রীজারিমূলে বিরোধীয় সম্পত্তি বাদীপক্ষের অনুকূলে দখল প্রদানকালে বিবাদীপক্ষের সশস্ত্র হামলা-ভাংচুর ও লুটপাটের মামলায় এক ইউপি সদস্যসহ ৭ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ২৯ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে ওই মামলার ৯ আসামি শেরপুরের আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আদালতে স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে উভয় পক্ষের দীর্ঘ শুনানী শেষে আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নূর-ই জাহিদ ওই ৭ জনের আবেদন নাকচ করে তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আসামিরা হচ্ছেন শেরপুর সদর উপজেলার সাতপাকিয়া গ্রামের মৃত মেরেজ উদ্দিনের ছেলে, ইউপি সদস্য কোকিল মিয়া (৩২), কোরবান আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪৫), মজত আলীর ছেলে ময়নাল মিয়া (৪৬) ও আকিজ মিয়া (৩০), মানিকের ছেলে মন (৪০), আনোয়ার হোসেনের ছেলে হৃদয় মিয়া (২০) ও রুমান মিয়া (১৯)। একইসাথে আদালত রোকসানা (৪০) ও সাবিনা (৩৮) নামে মামলার অপর ২ আসামিকে অন্তবর্তীকালিন জামিনে মুক্তির আদেশ দেন। আদালতের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 


আদালত ও মামলার বিবরণ সূত্রে প্রকাশ, শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের সাতপাকিয়া গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে মো. ছানোয়ার হোসেন গংদের সাথে স্থানীয় আনোয়ার হোসেন ও ময়নাল হোসেন গংদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। ওই জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মো. ছানোয়ার হোসেন স্থানীয় মৌজার ১৫ শতক ভূমির বিষয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে স্বত্ব সাব্যস্তপূর্বক খাস দখলের ডিক্রীর জন্য সহকারী জজ আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় প্রথমত ডিক্রী ও পরবর্তীতে ডিক্রীজারির মামলায় বাদীপক্ষের অনুকূলে রায় হয়। সেই রায়ের আলোকে গত ২২ মে দুপুর ২টার দিকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির, কোর্ট কমিশনার, পুলিশ, অফিস সহায়ক ও ঢুলিসহ বাদীর ডিক্রীকৃত জমি পরিমাপ করত: দখল বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সরেজমিনে উপস্থিত হলে আসামিগণ তাদের কর্তব্যকাজে বাঁধা প্রদানসহ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রের মহড়া দিয়ে শক্তির দাপট ও ভীতির সঞ্চার করে। সেইসাথে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট ও বাদীর ২ সহোদর ভাই হুমায়ুন কবির ও সাব্বির মিয়াকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে।


এদিকে ওই ঘটনায় ছানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ইউপি সদস্য কোকিল মিয়া ও আনোয়ার হোসেনসহ ৯ জনকে স্বনামে ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনকে আসামি করে গত ২৯ মে দ্রুত বিচার আদালতে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তা শেরপুর সদর থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হয়।


মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. শাহজাহান বলেন, দেওয়ানী আদালতের ডিক্রীকৃত জমি একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর উপস্থিতিতে আদালতের সংশ্লিষ্ট স্টাফগণ বাদীপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে গেলে একজন ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষ কর্তব্যকাজে বাঁধা প্রদানসহ হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। ওই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দ্রুতবিচার আইনের মামলায় ইউপি সদস্যসহ ৭ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম মমিন দাবি করেন, আসামিরা আদালতের আদেশ প্রতিপালনে বাঁধা প্রদান করেনি। বাদীপক্ষ বিনা উস্কানিতে আসামিপক্ষের উপর হামলা চালিয়ে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ওই মামলা দিয়েছে।

আঁখি

×