
হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার বার আউলিয়া গ্রামের কৃষক মোঃ দুলাল মিয়া বাড়ির পাশে প্রায় ২০ শতক জমিতে মাচা তৈরি করে তরমুজের আবাদ করেছেন।
বর্তমানে মাচায় মাচায় হলুদ ও সবুজ রঙের তরমুজ ঝুলছে। এরমধ্যে রয়েছে বাইরে হলুদ ভিতরে লাল, বাইরে সবুজ ভিতরে হলুদ রঙের তরমুজ। এর ফলন এতটাই ভালো হয়েছে যে, দেখে মন জুড়িয়ে যায়। খেতেও রসালো ও সুস্বাদু এই তরমুজ।
এসব তরমুজ বিক্রি করে প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা লাভের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। এখানে চাষাবাদে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা।
মো. দুলাল মিয়া জানান, তিনি ব্যবসা করেন। এর পাশাপাশি কৃষি কাজে জড়িত রয়েছেন। গত এপ্রিল মাসে ইউনাইটেড কোম্পানির মধুমালা ও ইয়েলো বার্ড জাতের তরমুজ চারা রোপণের জন্য কিছুদূর পরপর তৈরি করেন বেড। ওই বেডে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়ার পর ফুটো করে তাতে চারা রোপণ করা হয়। চারা কিছুটা বড় হলে বাঁশ, সুতা দিয়ে মাচা তৈরি করেন। বাঁশের খুঁটি দিয়ে মাচায় চারা তুলে দেওয়া হয়।
তিনি জানান, প্রথম তরমুজ চাষ করেছেন। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মাচায় তরমুজ চাষে তাকে পরামর্শ দিয়েছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম। ক্ষেতে প্রায় ৬০০ গাছে ৮০০ তরমুজ রয়েছে। বর্তমানে গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে। তরমুজ চাষে সহায়তা করছেন তার বাবা আব্দুল মন্নান ও ভাই আব্দুল মজিদ। তরমুজ বিক্রির উপযোগী হয়েছে।
তিনি জানান, বর্তমান বাজারে হলুদ ও সবুজ রঙের তরমুজের প্রতি কেজির দাম প্রায় ৭০ থেকে ১০০ টাকা। সে হিসেবে প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়- সবুজ কচি লতাপাতার মাঝে ঝুলছে হলুদ ও সবুজ রঙের তরমুজ। ছোট-বড় তরমুজে নুয়ে পড়েছে মাচা। মালচিং পদ্ধতিতে পোকা দমনে ব্যবহার করা হয়েছে হলুদ ও ফেরোমন ফাঁদ। ক্ষেতে জৈব বালাইনাশক ও জৈব সার ব্যবহার করা হয়েছে। তাতে কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে না।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম বলেন, এ অঞ্চলের মাটি তরমুজ চাষের উপযোগী। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলে কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মোটিভেশনের মাধ্যমে মাচায় দুই রঙের তরমুজ চাষ করেন কৃষক মো. দুলাল মিয়া। তিনি তরমুজ প্রদর্শনী আবাদ করে সফল। তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছি। তার ক্ষেতে আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চিন্ময় কর অপু বলেন, বাহুবলে ছিল না তরমুজ চাষ। আমরা কৃষকদের উৎসাহ দিয়েছি। এতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তরমুজ চাষ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার বার আউলিয়া গ্রামে হলুদ ও সবুজ রঙের তরমুজ চাষ করেন মো. দুলাল মিয়া। তার জমিতে চাষকৃত হলুদ ও সবুজ রঙের তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। প্রমাণ হলো হলুদ ও সবুজ রঙের তরমুজ চাষে বাহুবলের মাটি বেশ উপযোগী। এ জাতের তরমুজ রসালো ও সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর।
Jahan