
ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লার মেঘনা নদীপথের কুখ্যাত জলদস্যু ও চাঁদাবাজ ‘সোহাগ গ্রুপের’ প্রধান মো. সোহাগ মিয়াকে (৩২) গ্রেপ্তার করেছে চাঁদপুর রিজিওনের অধীনস্থ মেঘনা চালিভাঙ্গা নৌ পুলিশ৷
‘সোহাগ গ্রুপের’ প্রধান মো. সোহাগ মিয়াকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন,ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আজমগীর হোসাইন। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নৌপুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ জুলাই চালিভাঙ্গা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির দায়ের করা একটি পুলিশ অ্যাসল্ট মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর মঙ্গলবার কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সোহাগকে দুই দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন। সোহাগ মিয়া নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার হাঁড়িয়া বৌদ্ধপাড়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি বহুদিন ধরে মেঘনা নদীপথে নৌযান, বাল্কহেড, লঞ্চ ও ড্রেজারের চালকদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদা আদায় করে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
নৌ পুলিশের দাবি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের সলিমগঞ্জ থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের মেঘনা ঘাট পর্যন্ত নদীপথে দীর্ঘদিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল সোহাগ ও তার নেতৃত্বাধীন 'সোহাগ গ্রুপ'। গত ২৩ এপ্রিল বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে মেঘনা উপজেলার নলচর গ্রামসংলগ্ন নদীতে একটি স্পিডবোটযোগে এসে ‘সোহাগ গ্রুপের’ সদস্যরা ‘এমবি অনাবিল নৌ পরিবহন’ নামের একটি বাল্কহেডসহ একাধিক নৌযানে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে। শুধু অনাবিল বাল্কহেড থেকেই আদায় করা হয় ১১ হাজার টাকা। পরে খবর পেয়ে চালিভাঙ্গা নৌ পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সোহাগসহ এজাহারভুক্ত অন্যান্য আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলার প্রস্তুতি নেয়। একপর্যায়ে প্রায় ২০ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রসহ পুলিশের ওপর সরাসরি হামলা চালায়। একপর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ শর্টগান থেকে ১১ রাউন্ড গুলি (রাবার ও সিসা) ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে পুলিশের কয়েকজন সদস্য ওই সময় আহত হন। পরে আহত পুলিশ সদস্যদের মেঘনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয় সেদিন। তবে ঘটনাস্থল থেকে দুটি রামদা, একটি লোহার রড ও দুটি লাঠি উদ্ধার করে জব্দ তালিকাভুক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে চালিভাঙ্গা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আজমগীর হোসাইন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সোহাগ গ্রুপ মেঘনা নদীপথ দখলে রেখে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করে আসছিল। তাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বড় ধরনের সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তবে এই মামলার অন্যান্য আসামিদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের পাওয়া যাবে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
ফারুক