
হবিগঞ্জ হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাঞ্জ নতুন ব্রিজ ও অলিপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের মালিকানাধীন জমি দখল করে গড়ে ওঠা শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন। অলিপুরে উদ্বোধন করা হয় পুলিশ বক্স। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত এ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পল্লব হোম দাসের নেতৃত্বে সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেনের তত্ত্বাবধানে ও হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিমের পরিকল্পনায় এ উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে এক্সভেটর (ভেকু মেশিন) দিয়ে শতাধিক অবৈধ টং দোকান, চায়ের স্টল, কাঠের ছাউনি ও স্থায়ী কাঠামো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
অভিযানে অংশ নেন শিল্প পুলিশের এডিশনাল এসপি ফয়ছল আহমেদ, শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা, শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি দীলিপ কান্ত নাথ। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য ও সেনা সদস্য অভিযানে সহায়তা করেন।
ইউএনও পল্লব হোম দাস বলেন, মহাসড়কের পাশে সরকারি জায়গা দখল করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছিল। এতে যানজট তৈরি হচ্ছিল। দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছিল। সরকারি জমি পুনরুদ্ধারে নিয়মিত অভিযান চলবে।
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন তিনি বলেন, অভিযানে প্রায় দুই একর জমি উদ্ধার হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন কেউ পুনরায় দখল করতে না পারে, সেজন্য নিয়মিত নজরদারি করা হবে।
হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রতিবন্ধকতায় মহাসড়কের জায়গা উদ্ধার সম্ভব হচ্ছিল না। এখানে ৫ আগস্টের পর আমরা কঠোর অবস্থান নিয়ে সকল প্রশাসনের সক্রিয় সহায়তায় এবার সফলভাবে দখলদারদের উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, উদ্বোধন হওয়া পুলিশ বক্স কেবল একটি স্থাপনা নয়, এটি আইনের শাসনের প্রতীক। মহাসড়কের জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। এখন থেকে অলিপুর শিল্প এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ ও শিল্প পুলিশের টহল কার্যক্রম চালু থাকবে।
অভিযান চলাকালে কিছু দোকানদার মৌখিক আপত্তি জানালেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। উচ্ছেদ হওয়া দোকানি কুদ্দুছ মিয়া বলেন, আমার দোকানেই সংসার চলতো। কোনো নোটিশ ছাড়া হঠাৎ এসে ভেঙে দিল। আমি এখন কোথায় যাবো?
তবে প্রশাসনের দাবি, দুদিন আগেই মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ এ অভিযানকে স্বাগত জানালেও পুনরায় দখলের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
সবুজ মিয়া নামের এক বাসিন্দা বলেন, উচ্ছেদ তো হয়, কিন্তু কয়েকদিন পর আবার জায়গাগুলো দখলে চলে যায়। এবার যেন সেটা না হয়, প্রশাসনের উচিত কঠোর নজরদারি চালানো।
হাইওয়ে থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, এ অবৈধ স্থাপনাগুলো যানবাহন চলাচলে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এসপি স্যারের পরিকল্পনায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আর কাউকে মহাসড়কের পাশে অবৈধভাবে স্থাপনা গড়তে দেওয়া হবে না। বিকেলে অলিপুরে হাইওয়ে পুলিশ ও শিল্প পুলিশ বক্সের উদ্বোধন হয়। উদ্বোধন শেষে মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন হাইওয়ে পুলিশ সিলেট রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
Jahan