ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

ভোগান্তিতে চার উপজেলার লাখো মানুষ

রাস্তার উন্নয়ন কাজে ধীরগতি

শাহ জালাল, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:২৩, ১৫ জুলাই ২০২৫

রাস্তার উন্নয়ন কাজে ধীরগতি

রাস্তার উন্নয়ন কাজে ধীরগতি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার প্রধান সড়কটির সংস্কার কাজ চলছে ধীরগতিতে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এ সড়কে যাতায়াতকারী চারটি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। 
জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে বৈদ্যেরবাজার পর্যন্ত সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। কার্যাদেশ অনুযায়ী গত মে মাসে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও শেষ হয়নি। কাজটির ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। কিন্তু সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ধীরগতির কারণে সড়কটির কাজ এখনো শেষ হয়নি।

ফলে এ সড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকা ব্যবহার করে ঢাকা যাতায়াতকারী আড়াইহাজার, মেঘনা, গজারিয়া ও সোনারগাঁ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। বিশেষ করে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, থানাসহ সরকারি সকল অফিসে যাতায়াতকারীদের মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বৈদ্যেরবাজার থেকে শহীদ মজনু পার্ক পর্যন্ত সড়কটির কিছু জায়গায় কার্পেটিং, কিছু জায়গায় আর.সি.সি করে সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। তবে দুই মাস আগে শহীদ মজনু পার্ক থেকে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কটির ড্রেনেজের কাজ শেষ হলেও রাস্তার সংস্কার কাজ থেমে আছে। এলাকাটি অর্থনৈতিক শিল্পাঞ্চল ও বাণিজ্যিক হওয়ায় সব সময় ট্রাক, লরিসহ ভারি যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় বৃষ্টির এ মৌসুমে রাস্তাজুড়ে খানাখন্দ, গর্ত, কাদায় একাকার হয়ে আছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, হাসপাতালের রোগীসহ এলাকাবাসীর জনদুর্ভোগ চরম পর্যায় পৌঁছেছে। 
স্থানীয় ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া বলেন, গত এক বছর ধরে রাস্তাটির সংস্কার কাজ চলছে। এভাবে থেমে থেমে সংস্কার কাজ আমি কখনো দেখিনি। কিছুদিন কাজ করে আবার কাজ বন্ধ করে দেয়। এতে আমরা ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছি।
আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া এলাকার ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ বলেন, ব্যবসায়িক কাজে সপ্তাহে তিন চারদিন আমি এ সড়ক ব্যবহার করে ঢাকায় যাতায়াত করি। কিন্তু সড়কটির সংস্কার কাজ ধীরগতির কারণে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। এতে সঠিক সময়ে ব্যবসায়িক পণ্য সরবরাহ করতে পারছি না। স্থানীয় মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবুল হোসেন বলেন, ড্রেন নির্মাণ করে এভাবে রাস্তার সংস্কার কাজ ফেলে রাখা দুঃখজনক। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাঁটু পানি জমে যায়। এতে যানবাহনের চালক, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 
সড়কটির সংস্কার কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওটিবিএল লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. শাহরিয়ার বলেন, বৃষ্টির জন্য কাজটি শেষ করতে পারিনি। বৃষ্টির সময় কাজও করা যায় না। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ করবো। নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (সওজ) আবদুর রহিম বলেন, গত মে মাসে সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো কাজ শেষ হয়নি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ না করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হবে। তবে সড়কটির সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।

×