জলাবদ্ধতায় পচে গেছে আমন বীজতলা
উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে থেকে বাসস্ট্যান্ড হয়ে পশ্চিম বাজারের রামশালা খাড়ি ব্রিজ পর্যন্ত অবস্থিত কাঁচা ড্রেন আবর্জনা জমে ভরাট হয়ে গেছে। নিষ্কাশন ব্যবস্থা অকেজো হওয়ায় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ কারণে বর্তমান বৃষ্টি মৌসুমে উপজেলা সদর ইউনিয়নের অর্ধডজন গ্রাম ও ফসলের মাঠ জলাবদ্ধ হয়ে বিপুল পরিমাণ আমন ধানখেত হুমকির মুখে পড়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে ওইসব গ্রামবাসী। এলাকাবাসী অবিলম্বে পাকা ড্রেন নির্মাণ অথবা কাঁচা ড্রেন সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, দেশ স্বাধীনের অনেক আগে থেকে উপজেলা সদর ইউনিয়নের শিয়ালশন, শিবপুর, জিনইর, বিষ্ণুপুরসহ অর্ধডজন গ্রাম ও গ্রাম লাগোয়া ফসলের মাঠে জমা হওয়া বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য আদমদীঘি উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে দিয়ে বাসস্ট্যান্ড হয়ে পশ্চিম বাজার রামশালা খাড়ি ব্রিজ পর্যন্ত অবস্থিত কাঁচা ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছিল।
সময়ের ব্যবধানে সেই ড্রেন আবর্জনা জমে ভরাট হয়ে গেছে অনেক আগেই। এরশাদ সরকার আমলে উপজেলা গঠিত হবার পর অবকাঠামো উন্নয়ন হলেও ওইসব গ্রাম ও মাঠে জমা হওয়া বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য পাকা ড্রেন নির্মাণ করা তো দূরের কথা কোনো সংস্কারও করা হয়নি। ফলে ক্রমেই জলাবদ্ধতা বেড়েই চলেছে। এ বিষয় নিয়ে প্রায় প্রতি মাসের মাসিক সমন্বয় সভায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলোচনা করে থাকেন।
কিন্তু অদ্যাবধি কোনো সুফল মেলেনি। শিয়ালশন গ্রামের জুলফিকার আলী এবং শিবপুর গ্রামের গোলাম ফারুকসহ অনেকের অভিযোগ যে সুষ্ট ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন হয় না। এতে করে ফসল রক্ষাসহ নানা দুর্ভোগে পোহাতে হয়। তারা অবিলম্বে পাকা ড্রেন নির্মাণ অথবা কাঁচা ড্রেন সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বুধবার উপজেলা প্রকৌশলী রিপন কুমার সাহা বলেন, উপজেলা প্রশাসন ক্যাম্পাসে ইতোমধ্যে কিছু ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ড্রেন নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতার বিষয়ে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. রুমানা আফরোজ বলেন, বুধবারই জলাবদ্ধতা নিরসনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে ভরাট হয়ে যাওয়া কাঁচা ড্রেন ভেকু মেশিন দিয়ে খনন করার কাজ শুরু করা হবে।
কলাপাড়ায় পচে গেছে আমনের বীজতলা
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী থেকে জানান, ১৬ বিঘা জমিতে আমন আবাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় বীজতলা করেছিলেন কৃষক সেলিম হাওলাদার। তাও পচন ধরেছে। অতিবর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় এ কৃষকের এমন সর্বনাশ হয়েছে। দুই দফায় বিপুল পরিমাণে দেনা হয়েছেন বীজ ধান কেনার জন্য। এ জন্য তার ধার-দেনা করতে হয়েছে। এখন আমন আবাদ করতে হলে অন্য কোনো এলাকা থেকে আমন চারা কিনতে হবে।
পশ্চিম সোনাতলা গ্রামের এই চাষির এখন দরকার আমন চারা কেনার। তাও রয়েছে অনিশ্চয়তার মধ্যে। তিনি দিশাগ্রস্ত অবস্থায় পড়েছেন। একই দশায় আদমপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল সিকদারের। ১৪ বিঘা জমি আবাদের জন্য করা বীজতলা দুবার জলাবদ্ধতায় পচে গেছে। তারও চরম বেহালদশা এখন। কোথায় পাবেন আমন চারা এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তিনি জমি অনাবাদী থাকার শঙ্কায় পড়েছেন। পচা-গলা যা বীজতলা ছিল তাও মঙ্গলবার রাতের বৃষ্টিতে আবার পানি জমেছে।
কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আরাফাত হোসেন জানান, জলাবদ্ধতায় কৃষকের আমন আবাদে সমস্যা হচ্ছে। কিছু কিছু বীজতলা নষ্ট হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে হিসাব নিরূপণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া স্লুইসখালের বাঁধ অপসারণ করে জলাবদ্ধতা দূর করণের জন্য উপজেলা প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।