উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চল রঘুনন্দন পাহাড়ের পাশে বিভিন্ন শিল্প-কারখানার বর্জ্য ও প্লাস্টিক সামগ্রী ফেলা হচ্ছে
মাধবপুর উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চল রঘুনন্দন পাহাড়ের পাশে বিভিন্ন শিল্প-কারখানার দূষিত বর্জ্য ও প্লাস্টিক সামগ্রী ফেলার কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। প্রায় পাঁচ-ছয় বছর ধরে নির্জন পাহাড়ের পাশে শিল্প-কারখানার বর্জ্য ফেলায় ওই এলাকা দিয়ে দুর্গন্ধের কারণে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। জায়গাটি শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা ও মাধবপুর উপজেলার মধ্যবর্তী স্থান হওয়ায় কোনো উপজেলা প্রশাসনই পরিবেশ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
স্থানীয়রা জানান, গত ১০ বছর আগে মাধবপুর উপজেলার শাহজীবাজার এলাকায় রেললাইনের পাশে এবং রঘুনন্দন পাহাড় কোল ঘেঁষে দেশের অনেক নামিদামি শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠে। এসব শিল্প-কারখানার দূষিত বর্জ্য ফেলার জন্য কারখানার নিদিষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই কারখানা কর্তৃপক্ষ দূষিত বর্জ্য রঘুনন্দন পাহাড়ের রাস্তার পাশে ফেলে জমা করে রেখেছে। এর পাশ দিয়ে ঢাকা-সিলেট রেললাইন রয়েছে। ময়লার কারণে রেলের যাত্রীরা দূষিত বায়ুর কবলে পড়েন। এ ছাড়া ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা পড়েছেন বড় সমস্যায়। স্থানীয়রা ময়লা ফেলতে নিষেধ করলেও তাদের নিষেধ কেউ মানছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজু মিয়া জানান, ময়লার কারণে রঘুনন্দন পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য ও জনস্বাস্থ্য হুমকির মধ্যে পড়েছে। কারখানার ময়লা নির্দিষ্ট একটি জায়গায় ফেলা হলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হতো না। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন খুবই নীরব। জায়গাটি দুই উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে হওয়ায় কেউই নজর দিচ্ছে না। জনবসতি, সংরক্ষিত বন ও রেললাইনের পাশে গুরুতপূর্ণ জায়গায় ময়লা ফেলায় বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে এলাকায় যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আবু তাহের জানান, শিল্প-কারখানার লোকজন বনের পাশে ময়লা ফেলে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করছেন। তাদের উচিত দূষিত বর্জ্য তাদের নিজস্ব জায়গায় ফেলা, যাতে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের কোনো ক্ষতি না হয়।
বাঘাসুরা ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, জায়গাটি মাধবপুর এবং শায়েস্তাগঞ্জ মাঝামাঝি সীমানায়। সংরক্ষিত বনের পাশে ময়লা ফেলে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য এখন ক্ষতির মধ্যে পড়েছে, প্রশাসনের উচিত যাতে এখানে কেউ ময়লা না ফেলতে পারে তার ব্যবস্থা নেওয়া। ময়লা ফেলা অব্যাহত রাখলে সংরক্ষিত বনের অনেক ক্ষতি হতে পারে। হবিগঞ্জ সংরক্ষিত বনের সহকারী বন সংরক্ষক তারেক রহমান বলেন, বনের পাশে ময়লা ফেলা কারওই উচিত হয়নি। এসব ময়লা বনের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
বিষয়টি কীভাবে সুরাহা করা যায় বনবিভাগ সে বিষয়ে অনেক তৎপর রয়েছে। এ বিষয়ে শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) সাইফুল উল্লাহ জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। রেল ও বনের মধ্যবর্তী স্থানে ময়লা ফেলে রাখা হয়েছে। মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুর আহসান জানান, বন ও রেলের জায়গার মধ্যে ময়লা ফেলা পরিবেশবিরোধী কাজ। যারা এ ধরনের কাজ করছেন, জেলা প্রশাসককে অবগত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন আন্তরিক।