ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বরফ সংকটে বিপাকে  মণিরামপুরের মাছের  মোকাম

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস

প্রকাশিত: ২২:১৩, ৯ জুন ২০২৩

বরফ সংকটে বিপাকে  মণিরামপুরের মাছের  মোকাম

মাছ কিনে এভাবে আড়তে ফেলে রাখা হয়েছে

বরফ সংকটে পড়েছে মাছের বড় মোকাম যশোরের মণিরামপুরের আড়ত ব্যবসায়ীরা। গত এক সপ্তাহ ধরে বরফ সংকটের কারণে তারা মাছ দূরে পাঠাতে পারছে না। এতে ক্রয়কৃত মাছ দেশে ও দেশের বাইরে পাঠাতে না পারায় লোকসানের মুখে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। 
জানা যায়, দেশের অভ্যন্তরের বিভিন্ন জেলায় ছাড়াও এ মোকামের মাছ ভারতের তিন রাজ্যে যায়। বরফ সংকটে দেশের বাইরে পাঠানো তো দূরের কথা দেশের মধ্যেও সরবরাহ করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। 
অপরদিকে তীব্র দাবদাহ ও পানির অভাবে ঘেরে মাছ রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। মাছ মারাও যাচ্ছে। এ কারণে ঘের মালিকরা মাছ আড়তে নিয়ে আসলেও তা সস্তায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। 
উপজেলা মৎস্য অফিস জানায়, উপজেলার চার হাজার ৮১০ মাছের খামার, ১০৬৪৩ পুকুর, পাঁচ বাঁওড় ও দুই হাজার ৫৮৫ গলদা চিংড়ির ঘের হতে বছরে ৩৮ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। এ উপজেলায় বার্ষিক মাছের চাহিদা নয় হাজার ২০০ মেট্রিক টনের বিপরীতে উদ্বৃত্ত মাছ ভারতসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। বাইরে মাছ পাঠাতে হলে বরফের প্রয়োজন। উপজেলায় পাঁচটি বরফকল সচল থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে চাহিদার তুলনায় অনেক কম বরফ উৎপাদন হচ্ছে। এ কারণে মাছ কিনে চরম বিপাকে পড়েছেন আড়ত ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার সকালে সরেজমিন মণিরামপুরের মাছের মোকামে গেলে চোখে পড়ে ক্রয়কৃত মাছ আড়তের ভেতরে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে। 
এ সময় আড়ত ব্যবসায়ী আহাদ আলী বলেন, ভোরে মাছ কিনে এভাবে মেঝেতে ঢেলে রাখা হয়েছে। বরফের সন্ধানে যশোর জেলার বিভিন্ন এলাকায় লোক পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনো বরফের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, আর কিছু সময় পার হলে মাছে পচন ধরবে। এতে করে চরম লোকসানে পড়তে হবে। মণিরামপুর পাইকার মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আজিম বলেন, এই মোকামের মাছ ভারতের তিন রাজ্য ত্রিপুরা, আসাম ও পশ্চিমবাংলায় যায়। এ ছাড়া সিলেট, সুনামগঞ্জ, আখাউড়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শহরে যায়। বরফ না হলে কোনোভাবেই মাছ পাঠানো সম্ভব হয় না। আড়ত ব্যবসায়ী মুকুল হোসেন জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার পাঁচটি বরফ কারখানায় চাহিদার তুলনায় অনেক কম বরফ উৎপাদন হচ্ছিল। গত বৃহস্পতিবার কোনো কারখানায় বরফ উৎপাদন হয়নি। এ কারণে মাছ কিনে চরম বিপদে পড়েছেন তিনি। বরফ কলের মালিক আনিছুর রহমান জানান, বরফ উৎপাদনে টানা ১২ ঘণ্টা বিদ্যুতের দরকার হয়। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ মিলছে। বরফ সংকটে শুধু ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না। লোকসানের মুখে পড়েছেন মাছের খামারিরাও।


 

×