ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

এ্যাপ্রোস সড়ক ছাড়াই আড়াই কোটি টাকার ব্রীজ, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

নিজস্ব  সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা

প্রকাশিত: ১৭:২০, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২

এ্যাপ্রোস সড়ক ছাড়াই আড়াই কোটি টাকার ব্রীজ, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

ব্রীজ

এ্যাপোস সড়ক ছাড়াই ব্রীজ নির্মাণ করে দুই বছর ফেলে রেখেছেন ঠিকাদার মোয়াজ্জেম হোসেন সিকদার। সরকারের দেয়া আড়াই কোটি টাকার ব্রীজ কোনই কাজে আসছে না। এতে ভোগান্তিতে পরেছেন আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নসহ ওই সড়কে চলাচলাকারী অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। দ্রুত এ্যাপোস সড়ক নির্মাণ করে চলাচল উপযোগী করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

জানা গেছে,২০২০ সালের জুন মাসে বরগুনা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী অফিস আমতলী উপজেলার আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ঘোপখালী খালে ব্রীজ নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করে। ২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এ ব্রীজ নির্মাণের কাজ পায় পটুয়াখালীর কেকে এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। 

২০২১ সালের জুন মাসে দুই পিলারে ২৪ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.৩২ মিটার প্রস্থের ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়। 

মূল ব্রীজ নির্মাণ কাজ শেষ হলেও গত দেড় বছর ধরে ব্রীজের এ্যাপ্রোস সড়ক নির্মাণ না করে ফেলে রেখেছেন। কার্যাদেশে ব্রীজের দুই প্রান্তে এক’শ ফুট এ্যাপ্রোস সড়ক নির্মাণের কথা উল্লেখ রয়েছে। এ্যাপ্রোস সড়ক না করেই ঠিকাদার মূল ব্রীজ নির্মাণ বরাদ্দ দুই কোটি টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। 

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ এ্যাপ্রোস সড়ক নির্মাণের জায়গা না রেখেই ব্রীজের প্লান করা হয়েছে। তারা আরো অভিযোগ করেন ঠিকাদার কার্যাদেশ অনুসারে কাজ না করে ব্রীজ ফেলে রেখেছেন।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মূল ব্রীজের নির্মাণ কাজ শেষ। কিন্তু ব্রীজটি এ্যাপ্রোস সড়ক বিহীন দাঁড়িয়ে আছে। মানুষের চলাচলের জন্য ব্রীজের দুই পাশে ১০-১২ ফুট দীর্ঘ কাঠের সিড়ি দিয়ে রেখেছেন। ওই সিঁড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ ব্রীজে ওঠে পাড় হচ্ছে। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসহাক মুন্সি ও দেলোয়ার হোসেন বলেন, ব্রীজ নয়, এটা মরণ ফাঁদ। ঠিকাদার ব্রীজের এ্যাপ্রোস সড়কের কাজ না করেই দের বছর ধরে ফেলে রেখেছেন। এতে মানুষের চলাচল চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। 

আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসা. সোহেলী পারভীন মালা বলেন, সরকার ব্রীজ নির্মাণ করে মানুষের উপকারার্থে কিন্তু এখন এ ব্রীজ মানুষের কোন কাজে আসছে না। ঠিকাদারকে বারবার বলা সত্বেও তিনি  ব্রীজের এ্যাপ্রোস সড়ক নির্মাণ করছেন না। এতে মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। দ্রুত এ্যাপ্রোস সড়ক নির্মাণ করে ব্রীজ উন্মুক্ত করে দিয়ে মানুষের ভোগান্তি লাঘবের দাবি জানিয়েছেন তিনি। 

পটুয়াখালী কেকে এন্টার প্রাইজের মালিক ঠিকাদার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সিকদার বলেন, ব্রীজটি কার্যাদেশের চেয়ে উচ্চতায় বেশি নির্মাণ করা হয়েছে। তাই এ্যাপ্রোস সড়কের স্লাপ নির্মাণ করতে সমস্যা হচ্ছে। তারপরও অল্প দিনের মধ্যেই এ্যাপ্রোস সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করবো।

আমতলী উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ঠিদাকার মূল ব্রীজ নির্মাণ শেষে দুই কোটি টাকা বিল নিয়েছেন। কিন্তু এ্যাপ্রোস সড়ক নির্মাণ করছেও না বিলও নিচ্ছে না। কাজ না করে দীর্ঘদিন ফেলে রেখেছেন।  

বরগুনা এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রীয় মুখার্জি বলেন, সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসআর

সম্পর্কিত বিষয়:

×