অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ
জামালপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ।
চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আরো দুজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ১৮ সেপ্টেম্বর বাছাইয়ের দিনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করার অভিযোগে একজনের মনোনয়নপত্র বাতিল এবং অপর প্রার্থী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
ফলে চেয়ারম্যান পদে অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শ্রাবস্তী রায় জানান, জামালপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে এস এম আবু সায়েম বুধবার সকালে নিজে এসে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আবেদন করলে তার আবেদন গ্রহণ করা হয়।
এর আগে রবিবার প্রার্থিতা বাছাইয়ের দিনে মনোনয়নপত্রের হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগে অ্যাডভোকেট বাবর আলী নামের একজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জামালপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ছাড়া আর কোন চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকলো না। তাই তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছে।
২৫ সেপ্টেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে তাকে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত ঘোষণা হতে পারে। এদিকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের চৌকশ রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট আইনজীবী জামালপুর জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সাবেক চারবারের সভাপতি ও একবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ এবারই প্রথমবারের মতো স্থানীয় সরকার বিভাগের জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা পরিষদ এবার তাকেই দলীয় প্রার্থী হিসেবে এই পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। বুধবার অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ জেলার সর্বস্তরের মানুষ তাকে স্বাগতম জানিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ ও প্রখ্যাত আইনজীবী। তিনি ১৯৫৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নলছিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
তার পিতার নাম এম এ সামাদ ও মাতা জহুরা খাতুন। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তিনি বাবা-মায়ের দ্বিতীয় সন্তান। ১৯৮৫ সালের ৯ আগস্ট ডা. সাজদা-ই-জান্নাতকে জীবন সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করেন। পারিবারিক জীবনে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। পিতার কর্মস্থল নারায়ণগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির মাধ্যমে তার শিক্ষা জীবনের শুরু এবং সেখান থেকেই ১৯৭৪ সালে এসএসসি, ১৯৭৯ সালে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এম এস এস (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) ও এল এল বি সম্পন্ন করেন।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ১৯৭৯ সালে জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ১৯৭৯-৮০ ও ১৯৮০-৮১ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনোনীত প্যানেলে পরপর দুই বার সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন।
১৯৯০ সালে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক, এরপর ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৯৬-২০১১ মেয়াদে সহ-সভাপতি ২০১১-২০১৫ মেয়াদে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ২০১৫ সাল থেকে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে অদ্যাবধি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
তিনি তার মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা ও আন্তরিকতার অসম্ভব সমন্বয় ঘটিয়ে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আইন পেশায়ও তার বেশ সুনাম রয়েছে। অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আইনজীবী এবং ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
১৯৯৫ সালে তিনি জামালপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং চারবার যথাক্রমে ২০০৭, ২০০৮, ২০১১ ও ২০১৯ সালে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া কবি হিসেবেও তার বেশ পরিচিতি রয়েছে। ১৯৮৩ সালে প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘লাবণ্যে জড়ানো পাপ’ দেশে অত্যন্ত পাঠকপ্রিয়তা পায়। তিনি নারায়ণগঞ্জে অবস্থানকালীন ড্যাফোডিল কবিতাগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে তিনি জামালপুর কবিতা পরিষদের উপদেষ্টা।
এমএস