
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ), দেশে অলিম্পিক সংশ্লিষ্ট সকল খেলার নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি দ্বারা পরিচালিত এই সংস্থার চিত্র এবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। কারণ, পুরো কমিটির মধ্যে মাত্র ছয়জন সদস্য বৈধ, বাকিরা নানা বিধিনিষেধ ও অনিয়মে অবৈধভাবে পদে বহাল রয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)-এর নিয়ম অনুযায়ী, ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে কোনো ব্যক্তি অথবা টানা দুই মেয়াদের বেশি কেউ নির্বাহী পদে থাকতে পারেন না। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশে এই নিয়ম কি ইচ্ছাকৃতভাবে গোপন রাখা হয়েছিল? না হলে, কীভাবে এত বছর ধরে নিয়ম ভেঙেই পদ আঁকড়ে আছেন মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা, উপ-মহাসচিব মিকু, কোষাধ্যক্ষ এ কে সরকার ও তাবিউর রহমানসহ আরও অনেকে?
প্রতিবেদন বলছে, বর্তমান ৩৩ সদস্যের মধ্যে মাত্র ৬ জনের স্ট্যাটাস বৈধ, বাকিদের স্ট্যাটাস অফ কোয়ারেন্ট 2.0, অর্থাৎ তারা কার্যত পদে থাকার অধিকার হারিয়েছেন। তাই তাদের পোর্টফোলিও হোল্ড করাটাও আইনবিরুদ্ধ ও অবৈধ।
এরপরও তারা দায়িত্বে বহাল আছেন, যদিও অনেকে জেল হাজতে, আবার অনেকে পলাতক। অনেকেই এমনকি সংশ্লিষ্ট ফেডারেশনের বর্তমান অ্যাডহক কমিটিতেও নেই, ফলে কার্যত ক্রীড়াঙ্গন থেকেও ছিটকে পড়েছেন তারা। বারবার মিটিং ডাকার পরেও তাদের পাওয়া যায়নি, গেল এক বছরেও তারা অংশ নেননি কোনো কার্যক্রমে।
এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, যদি দেশের সর্বোচ্চ ক্রীড়া সংস্থা এত অনিয়মে চলতে থাকে, তবে গোটা ক্রীড়াঙ্গনের ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
বিওএর সাধারণ সভা না হলে নির্বাচন ডাকা সম্ভব নয়। যদিও প্রয়োজন অনুসারে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের সুযোগ আইনে রয়েছে, তবুও চলতি বছরের শেষদিকে নির্বাচনের ইঙ্গিত দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
একজন সদস্য জানান, “বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। তার আগেই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এবং সবাইকে জানানো হবে।”
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, যদি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি এসব অনিয়মের বিষয় জানে, তাহলে বাংলাদেশের উপর নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে।
অলিম্পিক মুভমেন্টের মূল আদর্শ ও আইওসি চার্টার যদি লঙ্ঘিত হয়, তবে তা আন্তর্জাতিকভাবে বড় ধরণের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই সবার প্রত্যাশা, বিওএর জেনারেল অ্যাসেম্বলির সদস্যরা আইন ও নীতিমালার ভিত্তিতে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন যা ক্রীড়াঙ্গনের মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ দুটোই রক্ষা করবে।
Jahan