
.
দীর্ঘ ২৩ বছর পর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসার দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড। প্রায় দুই যুগ পর ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে সেরা হওয়ায় দলটির সমর্থকরা সঙ্গতকারণেই আকাশে উড়ছেন। তারা বিভিন্ন আয়োজনে মুহূর্তটি স্মরণীয় করে রাখছেন। এরই অংশ হিসেবে জমকালো আয়োজনে চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান দলকে সংবর্ধনা দিয়েছে ক্লাবটির ব্যতিক্রমধর্মী সমর্থকগোষ্ঠী ‘মহাপাগল’। শনিবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে বর্ণাঢ্য আয়োজনে চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড়দের পুরস্কৃত করে সংগঠনটি।
অনুষ্ঠানে এসে মোহামেডানের সাফল্যের অন্যতম রূপকার ও অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতে রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছেন। তার মতো দলের প্রতিটি সদস্য, কোচিং স্টাফ, ভক্তদের ভালোবাসায় আবেগাপ্লুত হয়েছেন। গত কয়েক বছর ধরে সাদা-কালোদের তাঁবুতে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করায় সুলেমানের দিকে নজর আছে অনেক ক্লাবের। বারবার বিভিন্ন ক্লাব চেষ্টা করেছে তাকে দলে টানতে। কিন্তু সাদা-কালোদের ভালোবাসায় এতটাই আচ্ছন্ন হয়েছেন মালিয়ান তারকা; তিনি আর কোথাও যেতে চান না। লোভনীয় অনেক অফার থাকা সত্ত্বেও মোহামেডানে থাকতে চান। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সুলেমান দিয়াবাতে বলেন, ‘সত্যি বলতে আমার অনেক অফার ছিল, আছে। কিন্তু মোহামেডানকে আমি ভালোবাসি, এখানেই থাকতে চাই’।
ক্যাসিনো কান্ডে নাম জড়িয়ে যাওয়ার পর ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির সম্মান ধুলোয় মিশে যায়। এরপর ক্লাবের পরিচালক পর্ষদে আসে নতুন মুখ। ওই সময় প্রয়াত ফুটবলার বাদল রায়ের উদ্যোগে শুরু হয় মোহামেডান ক্লাবের নবযাত্রা। সেই যাত্রা খুব কঠিন ছিল। এমনকি রেলিগেশন জোনেও পড়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী দলটির। কিন্তু প্রতিবছর তারা এগিয়েছে একটু একটু করে। লম্বা সময় ধরে অগ্রগামিতা জারি রেখে মোহামেডান এখন শিরোপায় শোভিত। ২৩ বছর পর লিগ শিরোপার উৎসবে মেতেছে বিখ্যাত সাদা-কালোরা। মোহামেডানের লিগ শিরোপা উদ্যাপনের দিন মহাপাগলের অনুষ্ঠানে এসে সেই দুঃসহ যাত্রার কথা মনে করান ইমতিয়াজ সুলতান জনি। সমর্থকদের শিরোপা উপহার দেওয়া, ক্লাবের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি রেখেছেন মোহামেডানের খেলোয়াড়রা। সবসময় তাদের সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করেছেন মহাপাগলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি টি ইসলাম তারিক, ‘আমরা এমনই এক সমর্থক দল যারা দলের দুঃসময়েও মাঠে যাওয়া বন্ধ করিনি। এই দলটি যখন শিরোপার দৌড়ে ছিল না, তখনও আমরা মাঠে গিয়েছি। খেলোয়াড়দের উৎসাহ জুগিয়েছি। ভেবেছিলাম কঠিন সময়ে পাশে না থাকলে দলটি আরও শেষ হয়ে যাবে। দীর্ঘদিন পর সেই দলটিই উঠে দাঁড়িয়েছে; আমাদের শিরোপা উপহার দিয়েছে। সুতরাং সমর্থকদের প্রতি আমার আহ্বান, দলের দুঃসময়েও পাশে থাকতে হবে সবাইকে।’
অনুষ্ঠানে মোহামেডানের কোচসহ সব ফুটবলারের হাতে উপহার তুলে দেওয়া হয়। মহাপাগল সমর্থকগোষ্ঠীর ভোটে বর্ষসেরা দেশি-বিদেশি ফুটবলার, উদীয়মান তারকা, সেরা গোলদাতার পুরস্কারও দেওয়া হয়। মোহামেডানের পরিচালক ও ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরকে শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া হয়। এমন একটি আয়োজনের অংশ হতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত মোহামেডান ফুটবলাররা। সমর্থকদের ভালোবাসার এমন প্রতিদান তারা প্রতিবছর দিতে চান। আরও উপস্থিত ছিলেন দলের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব, কোচ মোহাম্মদ আলফাজ আহমেদ, গোলরক্ষক কোচ ছাইদ হাছান কানন, সাবেক তারকা ইমতিয়াজ সুলতান জনি, হাসানুজ্জামান খান বাবলু, সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির, জসিম উদ্দিন জোসি, মাসুদ রানাসহ অনেকে।
প্যানেল