
গ্রীষ্মকালে অনেক মৌসুমি ফলের দেখা পাওয়া যায়। যার মধ্যে রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুসহ নানা ফল। এই ঋতুতে মানুষ রোদ ও প্রচণ্ড তাপ থেকে বাঁচতে খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে পোশাক-পরিচ্ছদ সব কিছুতেই আনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন। সে হিসেবে অন্যান্য ফল বাদ দিয়ে তারা বেছে নেন এই ঋতুর ফলও।
এই ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লিচু। ভিটামিন বি-৬, সি, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজের মতো পুষ্টিগুণে ভরপুর থাকে এই ফল। এটি স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারী। এই কারণেই গ্রীষ্মকালে মানুষ এই ফলটি বেশি পছন্দ করে।
তবে উপকারী লিচু কখনো কখনো আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে। কাদের জন্য এই ফল ক্ষতিকারক হতে পারে, তা জানাতেই আজকের প্রতিবেদন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক—
অ্যালার্জি থাকলে
কিছু মানুষের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা হতে পারে, যেমন প্রুরিটাস (ত্বকের এক ধরনের চুলকানি), ছত্রাক (ত্বকের ফুসকুড়ি), ঠোঁট ফুলে যাওয়া এবং লিচু খাওয়ার পরে শ্বাসকষ্ট। এমন পরিস্থিতিতে আপনারও যদি কোনো ধরনের খাবারে অ্যালার্জি থাকে, তাহলে লিচু থেকে যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখুন।
নিম্ন রক্তচাপে ক্ষতিকর
কেউ যদি বেশি পরিমাণে লিচু খায়, তবে হঠাৎ করে তার রক্তচাপ কমে যেতে পারে। এর কারণে মাথা ঘোরা, অলসতা, ক্লান্তি ইত্যাদি সমস্যাও হতে পারে।
আপনি যদি নিম্ন রক্তচাপের রোগী হয়ে থাকেন এবং নিয়মিত এর ওষুধ খান, তাহলে সাবধানে লিচু খান।
ডায়াবেটিস থাকলে
লিচু খেলে শরীরে ব্লাড সুগার লেভেল কমে যায়। আপনারও যদি ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে যতটা সম্ভব কম লিচু খান।
এ ছাড়া এটি খাওয়ার সময় আপনার রক্তে শর্করার ওপর নজর রাখুন।
অস্ত্রোপচারের পর
লিচু শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। কেউ যদি অস্ত্রোপচারের সময় বা পরে এটি খায়, তবে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে কিছুটা সমস্যা হতে পারে।
গর্ভাবস্থা ও স্তন্যপান করালে
লিচু খাওয়া গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী নারীদের জন্য ক্ষতিকারক প্রমাণিত হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনো গবেষণা চলছে। তাই এই সময় লিচু থেকে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
লিচুর আরো কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। সেগুলো হচ্ছে, এই ফল ওজন বৃদ্ধি করে। এতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, জরুরি ফ্যাটি এসিড নেই। ফলে বেশি পরিমাণে খেলে তা শরীরের স্বাভাবিক ব্যালেন্স নষ্ট করে। খালি পেটে লিচু খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে। এ ছাড়া রক্তের গ্লুকোজও কমিয়ে দিতে পারে এই ফল।
তাই খেতে সুস্বাদু হলেও ইচ্ছেমতো লিচু খাওয়ার সুযোগ নেই। দিনে ১০-১২টি লিচু খাওয়া যেতে পারে। বয়স, শরীর, অসুস্থতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে পরিমিতভাবে লিচু বা যেকোনো ফল খেতে হবে। এ ছাড়া শিশুদের লিচু খেতে দেওয়ার আগে বিচি ফেলে দেবেন।
সূত্র : ইটিভি
সজিব