
কেশবপুরে বহুদিন ধরে বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ‘সুপারস্টার মেডিকেল অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার (২৫ মে) বিকেলে কেশবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরিফ নেওয়াজের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে প্রতিষ্ঠানটির কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মিলন হোসেনকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে কেশবপুর শহরের মাইকেল রোডে পশুহাটের বিপরীতে খুলনার একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ছত্রছায়ায় প্রতিষ্ঠানটি মেডিকেল কলেজের আদলে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। প্রচারপত্রে নিজেদের বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান বলে দাবি করে আসছিল তারা। রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া হচ্ছিল “কেএইসসি-২৫৩৯”। বিভিন্ন ভুয়া কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হচ্ছিল যার মধ্যে ছিল ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি, ক্লিনিক্যাল নার্স, মেডিকেল ল্যাব টেকনোলজি, ডেন্টাল কেয়ার, পল্লী চিকিৎসা, ইউনানী মেডিসিন প্র্যাকটিস, ফ্রিল্যান্সিং, ফার্মেসি সহ একাধিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ। অথচ প্রতিষ্ঠানটির কোনো সরকারি অনুমোদনই নেই, এমনকি অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ‘ম্যাটস’-এর সাথেও কোনো সম্পর্ক নেই।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি অনুমোদন ছাড়াই তারা নিজেদের মতো করে ওয়েবসাইট তৈরি করে তাতে ফলাফল প্রকাশ ও প্রচারণা চালাচ্ছিল। এতে করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও বিশ্বাস তৈরি করে প্রতারণা করা হচ্ছিল।
স্থানীয়দের মতে, সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এমন ভুয়া প্রতিষ্ঠান শুধু কেন্দ্রীয়ভাবে নয়, বিভিন্ন জেলায় শাখা খুলে চলছে। সেসব শাখাতেও ‘ফিজিওলজি’, ‘মেডিসিন’, ‘গাইনী অ্যান্ড অবস’, ‘সার্জারি’ কোর্সের দাবি করা হয় যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও বাস্তবতার সঙ্গে মিল নেই। সরকারি-বেসরকারি অনুমোদিত মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করার পরই এসব বিষয়ে ইন্টার্নশিপ ও বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ সম্ভব।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শরিফ নেওয়াজ বলেন, “সরকারি অনুমোদন ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানকে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হবে না। এ ধরনের প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
সচেতন মহল শাখা অফিসগুলোতেও দ্রুত অভিযান চালিয়ে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
মিমিয়া