ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৬ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঢেপা নদীর গর্ভে বসতভিটা, আতঙ্কে বীরগঞ্জের নদী পাড়ের মানুষ  

প্রদীপ রায় জিতু, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, বীরগঞ্জ

প্রকাশিত: ০০:৫৬, ২৬ মে ২০২৫

ঢেপা নদীর গর্ভে বসতভিটা, আতঙ্কে বীরগঞ্জের নদী পাড়ের মানুষ  

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের জেলেপাড়া ও নখাপাড়া এলাকাবাসী এখন চরম উদ্বেগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ঢেপা নদীর তীব্র ভাঙনে গত চার বছরে ৩০০ থেকে ৪০০ বিঘা ফসলি জমি, বসতবাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন অবকাঠামো নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর গর্ভে চলে গেছে স্কুল, মন্দির, খেলার মাঠ, রাস্তা এবং শতবর্ষী গাছপালা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নখাপাড়া, মাঝাপাড়া ও সাহাপাড়ার বসতভিটা, রাস্তা ও কৃষিজমি নদীতে ধসে পড়ছে। জেলেপাড়ায় ফুটবল খেলার মাঠ ও শ্মশানঘাট ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে চলে গেছে। নতুন করে নদীর পাড় ভাঙতে থাকায়, যেকোনো সময় আরও বাড়িঘর বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

নখাপাড়া গ্রামের কৃষক রুহুল আমিন বলেন, আমাদের ১ একর জমি চলে গেছে নদীর গর্ভে। বাগানবাড়ি ছিল এখন কিছুই নেই। সরকারি স্কুল, রাস্তা, মন্দির সবকিছু বাঁচাতে এখনই বাঁধ দরকার।

যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা ও নিরাপত্তাহীনতা
সাহাপাড়ার কৃষক ধীরেনচন্দ্র জানান, রাস্তাগুলো ভেঙে গেছে, ফলে অ্যাম্বুলেন্স, রিকশা-ভ্যান চলাচল করতে পারছে না। রাতে বের হওয়াই এখন ভয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একই এলাকার সুবাস রায় বলেন, জমির কাগজ আমাদের হাতে, কিন্তু নদীর জন্য চাষ করতে পারি না। আমরা যেন মালিক হয়েও গৃহহীন কৃষক।

মাঝাপাড়া গ্রামের কুমদিনি রায় জানান, আমরা ৫ বার বাড়ি সরিয়েছি নদীভাঙনের কারণে। এবারও হয়তো বাড়ি চলে যাবে। প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকি।

নদীর পাড়ে বসবাসকারী জেলে নরেন রায় বলেন, ফুটবল মাঠ ছিল, সেটাও নদী নিয়ে গেছে। এখন বাড়িঘর নদীতে যাচ্ছে। সরকার আমাদের দিকে তাকান, এটাই চাওয়া।

নিজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান আনিস বলেন, বাঁধ না থাকায় এ ভাঙন চলছে। মানুষজন বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। খুব দ্রুত নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

মুমু

×