ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শুরু ভূমি জরিপ, ২টি প্রমাণ ছাড়া কারো নামে হবেনা রেকর্ড খতিয়ান

প্রকাশিত: ১৬:০০, ২৫ মে ২০২৫

শুরু ভূমি জরিপ, ২টি প্রমাণ ছাড়া কারো নামে হবেনা রেকর্ড খতিয়ান

ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশে আবারও শুরু হয়েছে ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রম, এবং এইবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে—এই জরিপই হবে দেশের সর্বশেষ ও চূড়ান্ত ভূমি জরিপ। এরপর আর কোনো ভূমি জরিপের প্রয়োজন পড়বে না। ফলে যারা নিজেদের জমির মালিকানা ও নাম রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।

ভূমি জরিপে নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণপত্র এখন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যদি কারও কাছে এই দুটি প্রমাণ না থাকে, তাহলে তার নামে রেকর্ড খতিয়ান করা হবে না।

কী কী দলিল দরকার?
১. যথাযথ মালিকানা প্রমাণ:
আপনি কীভাবে জমির মালিক হয়েছেন, সেটির স্পষ্ট প্রমাণ থাকতে হবে। ওয়ারিশ সূত্রে হয়ে থাকলে দরকার হবে ওয়ারিশ সনদ ও সকল ওয়ারিশদের সম্মতিতে করা বণ্টন বা বাটবণ্টন দলিল।

২. ভোগ দখলের প্রমাণ:
আপনি বাস্তবিকভাবে সেই জমি ভোগ ও ব্যবহার করছেন—এই তথ্য জরিপ কর্মীদের দেখাতে হবে। শুধু কাগজপত্র যথেষ্ট নয়, বাস্তব দখলও জরুরি।

কারা সমস্যায় পড়তে পারেন?
যারা এখনো জমির মালিকানা পুরোপুরি নিজের নামে নামজারি করেননি, অথবা যাদের জমি নিয়ে পরিবার বা অন্য কারো সাথে বিরোধ চলছে, তারা এই জরিপে অংশ নিতে গিয়ে জটিলতায় পড়তে পারেন। বিশেষ করে যদি জমি বন্ধক, মামলা কিংবা ঋণ সংক্রান্ত কোনো জটিলতা থেকে থাকে—তাহলে সেই জমির ওপর মালিকানা দাবি করা আইনগতভাবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হতে পারে।

সাফ কবলা দলিল থাকলে?
যদি কেউ বৈধভাবে জমি কিনে থাকে এবং তার সাফ কবলা দলিল থাকে, তাহলে সেই দলিল দেখিয়েও রেকর্ড খতিয়ানে নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। তবে যে বিক্রেতার কাছ থেকে জমি কেনা হয়েছে, তার মালিকানাও ঠিকঠাক আছে কিনা, তা যাচাই করা জরুরি।

যদি জমি নিয়ে মামলা চলে?
যদি জমি সংক্রান্ত মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকে, তাহলে ভূমি জরিপ কর্মকর্তাদের তা অবহিত করতে হবে। মামলার রায় না আসা পর্যন্ত ঐ জমির জরিপ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়।

নতুন আইনের সুবিধা
নতুন ভূমি আইনের আওতায় এখন জমি সংক্রান্ত মামলায় রায় পাওয়া মাত্রই, ভোগ দখলের অধিকার স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আগে যেমন রায়ের পর আবার ‘ডিক্রি জারি’র জন্য আলাদা মামলা করতে হতো, এখন আর সেই প্রক্রিয়া লাগবে না।

সংক্ষিপ্ত পরামর্শ:
যারা জমির প্রকৃত মালিক, তাদের উচিত এখনই নিজেদের দলিলপত্র গুছিয়ে রাখা, ওয়ারিশদের সঙ্গে বণ্টন সংক্রান্ত আলোচনা করে নথিপত্র তৈরি করা এবং জরিপ চলাকালীন নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া।

আর যারা বিভ্রান্ত, সাহায্যপ্রার্থী বা পরামর্শ চান, তারা ভূমি অফিস অথবা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন—ভুল সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে।

মানুষের অধিকার রক্ষা করতে হলে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়াই প্রথম শর্ত।
 

মারিয়া

×