
কিডনিতে পাথর (Kidney Stones) গঠনের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, খাবারের উপাদান ও দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস কিডনিতে পাথর তৈরির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোর একটি। যে যে খাবার আপনার কিডনিতে পাথর গঠনের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে।
১. উচ্চ অক্সালেটযুক্ত খাবার
প্রস্রাবে অতিরিক্ত অক্সালেট থাকলে তা ক্যালসিয়ামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্যালসিয়াম-অক্সালেট পাথর তৈরি করে, যা সবচেয়ে সাধারণ কিডনি পাথরের ধরন।
উদাহরণ:
- পালংশাক
- বিট
- বাদাম ও চিনাবাদাম
- চকোলেট
- কালো চা
- সোয়াবিন, ওক্রা (ঢেঁড়স)
২. অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন
প্রাণিজ প্রোটিন প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম ও ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় এবং সাইট্রেটের পরিমাণ কমিয়ে দেয়, যা কিডনি পাথর প্রতিরোধে কাজ করে।
উদাহরণ:
- গরুর মাংস
- খাসির মাংস
- ডিম
- মাছ ও সামুদ্রিক খাবার
৩. অতিরিক্ত লবণ (সোডিয়াম)
সোডিয়াম কিডনিতে ক্যালসিয়ামের রি-অ্যাবজর্পশন বাধাগ্রস্ত করে, ফলে প্রস্রাবে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম চলে আসে এবং তা পাথরের কারণ হয়।
উদাহরণ:
- চিপস
- প্যাকেটজাত খাবার
- টিনজাত স্যুপ
- ফাস্ট ফুড
৪. অতিরিক্ত চিনি ও কৃত্রিম মিষ্টি
চিনির মধ্যে থাকা ফ্রুক্টোজ ইউরিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে এবং ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, ও সাইট্রেটের ব্যালেন্স নষ্ট করে।
উদাহরণ:
- সফট ড্রিংক
- ক্যান্ডি
- চকলেট
- বেকড ফুড
৫. অতিরিক্ত চা-কফি ও কম পানি পান
চায়ে থাকা অক্সালেট এবং কম পানি পান করার কারণে প্রস্রাব ঘন হয়ে যায়, যা খনিজ জমে পাথর তৈরির পরিবেশ তৈরি করে।
প্রতিরোধের জন্য করণীয়:
- প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি (২.৫-৩ লিটার) পান করুন
- অক্সালেটযুক্ত খাবার সীমিত করুন
- প্রাণিজ প্রোটিন ও লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
- প্রক্রিয়াজাত ও কৃত্রিম মিষ্টি এড়িয়ে চলুন
- খনিজ ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন
খাদ্যাভ্যাস শুধরে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। শরীরের প্রতিটি অঙ্গ যেমন সুরক্ষার দাবি রাখে, তেমনই কিডনির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের যত্নও প্রয়োজন বিজ্ঞানসম্মত সচেতনতা। সঠিক খাবার বেছে নেওয়াই হতে পারে কিডনি স্টোনের বিরুদ্ধে আপনার প্রথম প্রতিরক্ষা।
সায়মা