ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ওজন কমাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন? ডা. মুনমুন জাহানের পরামর্শ

প্রকাশিত: ০২:১০, ২৫ মে ২০২৫

ওজন কমাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন? ডা. মুনমুন জাহানের পরামর্শ

ছবি: সংগৃহীত

ওজন কমাতে না খেয়ে থাকা বা দীর্ঘ সময় উপোস করে থাকা কোনো কার্যকর উপায় নয়এমনটাই বলছেন পুষ্টি ও মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুনমুন জাহান। সম্প্রতি একটি ভিডিওবার্তায় তিনি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং (পর্যায়ক্রমিক না খেয়ে থাকা) নিয়ে ভুল ধারণা ও বাস্তবতা তুলে ধরেন।

ডা. মুনমুন বলেন, ‘যত কম খাবো, তত দ্রুত ওজন কমবেএই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। বরং শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে প্রতিদিনের খাবারে নির্দিষ্ট পরিমাণ প্রোটিন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।’ তাঁর মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য শরীরের প্রতি কেজি ওজন অনুযায়ী ১.২ থেকে ১.৪ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনেক সময় বাইরে থাকি, ব্যস্ততার কারণে বাইরে থেকেই খাবার খাই, যা অনেক সময় স্বাস্থ্যকর না হয়ে বরং ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়ায়।’

অনেকে অভিযোগ করেন যে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করেও ওজন কমছে না। এ প্রসঙ্গে ডা. মুনমুন বলেন, ‘ওজন কমা মানেই কেবল স্কেলের সংখ্যা কমা নয়। অনেক সময় মুখ বা শরীরের গঠনে পরিবর্তন আসে, জামাকাপড় ঢিলা হয়ে যায়, কিন্তু ওজন স্থির থাকে। তাই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের শরীরে পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করুন।’

নারীদের ক্ষেত্রে মাসিকের (পিরিয়ড) আগে পানিশূন্যতা ও ওয়াটার রিটেনশনের কারণে সাময়িকভাবে ওজন বেড়ে যেতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

দীর্ঘদিন এক ধরনের ফাস্টিং প্যাটার্ন অনুসরণ করাও শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ডা. মুনমুন বলেন, “যারা দীর্ঘদিন ‘১৬:৮’ বা ‘২০:৪’ প্যাটার্ন অনুসরণ করছেন, তাদের শরীর তা অ্যাডাপ্ট করে নেয়। ফলে ওজন কমার গতি বন্ধ হয়ে যায়। মাঝে মাঝে ২১ দিন বা এক মাস পর ফাস্টিং ব্রেক নেওয়া উচিত। এছাড়াও কখনো কখনো ফাস্টিং লেংথ ভ্যারি করে ৩৬ ঘণ্টাও ফলো করা যেতে পারে, তবে অতিরিক্ত দীর্ঘ ফাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।’

খাবার নির্বাচনে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ডা. মুনমুন বলেন, ‘আমরা বাসায় রান্না করলেও অনেক সময় তেল পুড়িয়ে ফেলি। পোড়া তেলের খাবার শুধু ওজন বাড়ায় না, মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ব্রেইন ফগ, ভুলে যাওয়ার প্রবণতা, মনোযোগের অভাব, এমনকি উদ্বেগও বাড়তে পারে।’

আরেকটি সাধারণ ভুল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনেকেই ফাস্টিংয়ের পর একেবারে বেশি খেয়ে ফেলেন। ভাবেন একদিন একটু বেশি খেলেই বা কী! কিন্তু এই ‘একটু একটু’ করেই ওজন আবার বাড়তে শুরু করে।”

সবশেষে ডা. মুনমুন জাহান বলেন, “আপনি যদি সঠিক নিয়মে প্রোটিন গ্রহণ করেন, স্ট্রেংথ ট্রেনিং চালিয়ে যান এবং সময়মতো ফাস্টিং প্যাটার্নে পরিবর্তন আনেন, তাহলে ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে আসা ‘ওজন কমার বন্ধ হওয়া’ অবস্থা (Weight loss plateau) আপনি সহজেই অতিক্রম করতে পারবেন।”

 

সূত্র: https://www.facebook.com/share/v/1DiLVmmVxL/

রাকিব

×