ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গাজায় মায়েদের আর্তনাদ: আমি ওকে ঘুম পাড়াই, খাবারের মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২৫ মে ২০২৫; আপডেট: ০৫:১৬, ২৫ মে ২০২৫

গাজায় মায়েদের আর্তনাদ: আমি ওকে ঘুম পাড়াই, খাবারের মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে

ছবি আলজাজিরা

গাজার প্রতিটি কোণে এখন মায়েদের চোখে অশ্রু আর বুকে চাপা হাহাকার। সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে না পারার যন্ত্রণায় কাতর তারা। দিনের পর দিন চলা ইসরায়েলি অবরোধ ও বোমাবর্ষণে খাদ্য, পানি, ওষুধ—সবকিছুরই তীব্র সংকট। এই অবস্থায় গাজার অভিভাবকদের সবচেয়ে কঠিন সংগ্রাম এখন সন্তানদের খাওয়ানো।

নাদি নাসরাল্লাহ, গাজা শহরে আশ্রয় নেওয়া এক উদ্বাস্তু মা, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, “আমরা পানযোগ্য পানি ও খাবার চাই। আমার মেয়েরা সকাল থেকেই রুটি চাচ্ছে, কিন্তু তাদের দেওয়ার মতো কিছুই নেই।”

আরেক মা, মেরভাত হিজাজি, যিনি নয় সন্তান নিয়ে গাজা শহরের অন্য এক শরণার্থী আশ্রয়ে রয়েছেন, বলেছেন, “আমি লজ্জিত, কারণ আমি আমার সন্তানদের খাওয়াতে পারছি না। রাতে যখন আমার ছোট্ট শিশু কাঁদে আর তার পেটটা ক্ষুধায় মোচড়ায়, আমি তখন কাঁদি।”

মেরভাত জানান, তার ছয় বছরের মেয়ে জাহা রাতে ঘুমাতে পারে না, ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের শব্দে জেগে ওঠে আতঙ্কে কাঁপতে কাঁপতে। “ঘুম ভেঙে উঠে ও খেয়াল করে যে সারাদিন কিছু খায়নি, ওর খিদে পায়। আমি তখন ওকে আবার ঘুম পাড়াই, প্রতিশ্রুতি দিই সকালবেলা খাবার দেব। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি যে মিথ্যে—জানি আমি।”

গাজার হাজারো মায়ের বাস্তবতা আজ এমনই। জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থাগুলো বহুবার সতর্ক করে বলেছে, গাজায় এখন মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে লাখো শিশু। অথচ ইসরায়েলি সেনারা সীমান্তে খাদ্য ও সাহায্যবাহী ট্রাক ঢুকতে দিচ্ছে না—এমন অভিযোগ আন্তর্জাতিক মহল থেকে ক্রমাগত উঠে আসছে।

বিশ্ববাসীর নীরবতা আর রাজনীতির ঠান্ডা হিসেবের চাপে প্রতিদিন ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাঁদছে গাজার শিশুরা। আর সেই কান্না শুনে নিঃশব্দে ভেঙে পড়ছেন তাঁদের মা, যাঁদের কাছে এখন সবচেয়ে বড় যুদ্ধ—একটুখানি রুটি জোগাড় করা।

এসএফ

×