ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনজুড়ে ১৩ জন নিহত, আহত অর্ধশতাধিক

প্রকাশিত: ০৮:০১, ২৫ মে ২০২৫

রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনজুড়ে ১৩ জন নিহত, আহত অর্ধশতাধিক

ছবিঃ সংগৃহীত

রাশিয়ার চালানো ধারাবাহিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনজুড়ে অন্তত ১৩ জন নিহত এবং ৫৬ জন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের আঞ্চলিক প্রশাসন।

শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই আক্রমণে শুধু রাজধানী কিয়েভেই ২৫০টি ড্রোন ও ১৪টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া, জানিয়েছে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী। এতে শহরের বিভিন্ন আবাসিক ভবনে আগুন ধরে যায়। কিয়েভে অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন। কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধ শুরুর পর রাজধানীর ওপর এটি অন্যতম বৃহৎ সমন্বিত আকাশ হামলা।

বিমান বাহিনী আরও জানিয়েছে, তারা ৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ২৪৫টি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে।

এই হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, "প্রতিটি হামলার সঙ্গে সঙ্গে গোটা বিশ্ব আরও বেশি করে বুঝতে পারছে—এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার পেছনে দায়ী মূলত মস্কো।"

কিয়েভে এক রাতে একাধিক বিস্ফোরণ ও আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুটি স্কুল এবং একটি ক্লিনিকও আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ওলহা চিরুখা (৬৪) রয়টার্সকে বলেন, “আমি চাই তারা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হোক। এভাবে সাধারণ মানুষকে বোমা মেরে মারা—অসহ্য। আমার তিন বছর বয়সী নাতনি ভয়ে চিৎকার করছিল।”

ডোনেৎস্ক অঞ্চলে চারজন, দক্ষিণাঞ্চলীয় ওডেসা ও খেরসনে পাঁচজন এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভে চারজন নিহত হয়েছেন। ওডেসায় বন্দরের অবকাঠামোতে ড্রোন হামলার খবরও পাওয়া গেছে।

কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান তিমুর তকাচেঙ্কো জানান, “শত্রু এখন ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র একত্রে ব্যবহারের কৌশল উন্নত করছে।”

অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়াকে যুদ্ধ বন্ধে বাধ্য করতে হলে তাদের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর ওপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।

গত সপ্তাহে রাশিয়া দাবি করেছে, ইউক্রেন শত শত বিস্ফোরক-ড্রোন দিয়ে মস্কোসহ বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে ৪৮৫টি ড্রোন তারা ভূপাতিত করেছে।

এই সংঘাতের মধ্যেই তুরস্কে আলোচনার পর রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধবন্দী বিনিময় শুরু করেছে। শনিবার জেলেনস্কি জানান, ৩০৭ ইউক্রেনীয় বন্দী ঘরে ফিরেছেন। শুক্রবার, দুই দেশই ৩৯০ জন করে সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিক মুক্তি দিয়েছে—এটি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরুর পর সবচেয়ে বড় বন্দী বিনিময়। এই বন্দী বিনিময়ের মোট সংখ্যা ১,০০০ পর্যন্ত পৌঁছাবে বলে জানানো হয়েছে এবং রোববার আরেক দফা বিনিময়ের কথা রয়েছে।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনো বাস্তবায়ন করতে পারেননি, সামাজিক মাধ্যমে বলেছেন, এই বন্দী বিনিময় “বড় কিছুর সূচনা হতে পারে???” তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপও করেছেন, যার পর তিনি দাবি করেন, “অচিরেই শান্তি আলোচনার সূচনা হতে যাচ্ছে।” তবে পুতিন শুধু বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে একটি “ভবিষ্যৎ শান্তি চুক্তির খসড়া” নিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত, তবে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির আহ্বানের বিষয়ে কিছু বলেননি।

সূত্রঃ বিবিসি 

নোভা

×