
ছবি আলজাজিরা
গাজা থেকে মুক্ত হওয়া ইসরায়েলি সেনা বন্দি না'আমা লেভি (Naama Levy) এক মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে জানিয়েছেন, বন্দি অবস্থায় সবচেয়ে বড় বিপদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলার কারণেই।
জানুয়ারিতে মুক্তি পাওয়া না'আমা সম্প্রতি একটি বিক্ষোভে অংশ নিয়ে বলেন, প্রতিবার বোমার শব্দ শুনে আমার মনে হতো এবারই বুঝি শেষ হয়ে গেলাম। এসব বোমাবর্ষণই আমাকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে ফেলেছে।
বোমা হামলার মধ্যে বেঁচে ফেরার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, একটি বোমা হামলায় যে বাড়িতে আমি বন্দি ছিলাম, তার একাংশ ধসে পড়েছিল। আমি যে দেয়ালের পাশে হেলান দিয়ে বসেছিলাম, সেটা না পড়ে যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, এই বোমাগুলো হঠাৎ করে আসে। প্রথমে এক ধরনের শিস শব্দ, তারপর একটিই কামনা—যেন সেটা আমার ওপর না পড়ে। এরপর শুরু হয় বিস্ফোরণের শব্দ, এত তীব্র যে শরীর অবশ হয়ে যায়। মাটি কাঁপতে থাকে। এটাই ছিল আমার প্রতিদিনের বাস্তবতা। আর এখন এটাই তাদের বাস্তবতা—যারা এখনো বন্দি অবস্থায় আছে।
না'আমা লেভির মতে, বর্তমানে গাজায় বন্দি থাকা অন্তত ৫৮ জন ইসরায়েলির অবস্থাও একই রকম। তাদের মধ্যে কয়েকজন ইতোমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন। “এই মুহূর্তেও বন্দিরা সেই একই শিস শব্দ, একই বিস্ফোরণ শুনছেন। তারা কাঁপছেন ভয়ে, পালানোর কোনও জায়গা নেই। কেবল প্রার্থনা করতে পারেন এবং দেয়ালের সঙ্গে লেগে থাকেন, এক অসহায় অনুভূতির মধ্যে।”
এই স্বীকারোক্তি নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের যৌক্তিকতা নিয়ে—বিশেষ করে যখন তা নিজের নাগরিকদের প্রাণ সংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মানবাধিকার সংস্থাগুলোও বারবার ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে ‘অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ’ ও ‘বেসামরিক ঝুঁকি’ সম্পর্কে। তবে এখন, সেই ঝুঁকির চিত্র তুলে ধরেছেন একজন ভুক্তভোগী নিজেই।
এসএফ