স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেট একটি মানসিক খেলা, মাঠে এবং মাঠেই বাইরে। বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া দুই টেস্টের সিরিজ শুরু হবে রবিবার। তবে এর আগেই মাঠের বাইরের মৌখিক লড়াই শুরু হয়ে গেছে ভালভাবেই। বিশ্বসেরা বাংলাদেশী অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান প্রত্যাশা জানিয়েছেন স্পিনে ঘায়েল করে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ২৯ বছর বয়সী অভিজ্ঞ অফস্পিনার নাথান লিয়ন দাবি করেছেন বাংলাদেশের যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত তারা। আর নিজেদের সেরা খেলা উপহার দিয়ে সিরিজ জয় নিয়ে দেশে ফেরার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি। দাবি করেছেন যে কোন উইকেটে স্পিন এবং পেস উভয় ধরনের বোলিং নিয়েই প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেয়ার সক্ষমতা আছে অসিদের। শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন তিনি।
গত বছর অক্টোবরেই সফরকারী ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় তুলে নিয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। সেই জয়ের মূল রূপকার ছিলেন স্পিনাররা। এবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও স্পিন দিয়েই জেতার প্রত্যাশা করছে স্বাগতিকরা। আর এ বিষয়টা নিয়েই মিরপুর টেস্ট শুরুর বেশ আগে থেকেই আলোচনা চলছে বেশ জোরেশোরে। এমনকি বাংলাদেশী অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও এ বিষয়টিকেই তুলে ধরেছেন। এ বিষয়ে অসি অফস্পিনার লিয়ন বলেন, ‘আসলে আমার মনে হয় আমরা সবকিছু দেখার অপেক্ষায় আছি। উভয় দল আগে কখনও পরস্পরের মোকাবেলায় নামেনি। তাই এমন বিবৃতি দেয়া অনেক বড় ব্যাপার। কিন্তু এটা যার যার ব্যক্তিগত অভিমত। আমরা শুধু কি করব সেটা নিয়েই চিন্তিত। তারা যা খুশি এগিয়ে এসে বলতে পারে। কিন্তু আমরা অনুশীলন করে ভালভাবেই প্রস্তুত হচ্ছি। যে কোন আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য মুখিয়ে আছি আমরা।’ তবে লিয়ন জানিয়ে দিলেন তাদের পেস বোলিং শক্তির কথা। দলে যে কয়েকজন পেসার আছে তারা এমন উইকেটেও স্পিনারদের সঙ্গে সহযোদ্ধা হিসেবে থেকে যে কোন প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট তুলে নিতে সক্ষম বলে দাবি লিয়নের। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব ভাল তিনজন ফাস্ট বোলার পেয়েছিÑ জশ হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্স ও জ্যাকসন বার্ড। তারা এ ধরনের কন্ডিশনেও বল ঘোরাতে পারেন। ভারত ও শ্রীলঙ্কায় আমরা সেটা দেখেছি তাদের কাছ থেকে। আমার মনে হয় না বাংলাদেশে এর কোন ব্যতিক্রম হবে। আমি মনে করি অস্ট্রেলিয়ানরা অংশীদারিত্ব দিয়ে বোলিং করে এবং একযোগে ২০ উইকেট তুলে নিতে পারে। আমার সঙ্গে অন্য কারও যুদ্ধ নয় এখানে। এটা দলগত খেলা এবং আমরা এখানে ২০ উইকেট নিতেই এসেছি।’
বাংলাদেশ প্রত্যাশা করছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুই ম্যাচেই জয়ের। এমন কথাই বলেছেন সাকিব। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতে ভারত সফরের পর আত্মবিশ্বাস বেড়েছে অসিদের। এ কারণে জয় নিয়ে দেশে ফেরার স্বপ্ন লিয়নেরও, ‘আমাদের নিজস্ব কিছু লক্ষ্য আছে, কিন্তু সেটা নিয়ে এখানে কথা বলতে আসিনি। আমরা হাসিমুখে ক্রিকেট খেলে কঠিণ প্রতিযোগিতা করতে চাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। তারা ভাল দল। আমাদের ভদ্রস্থ একটি সফর গেছে ভারতে। হয়তো ঠিক অবস্থানে থেকে শেষ করতে পারিনি, তবে দল সেখান থেকে অনেক কিছুই শিখেছে এবং কিছু আত্মবিশ্বাস লাভ করেছে। প্রায় একই স্কোয়াড এখানে এসেছে। আমরা নিজেদের পদ্ধতিগত দিক থেকে নিজেদের কাজগুলো বাংলাদেশের বিপক্ষে সঠিকভাবে করার ক্ষেত্রে বেশ আত্মবিশ্বাসী। ব্যক্তিগতভাবে আমি নিজের বোলিং নিয়ে সন্তুষ্ট। আমরা এখানে দুই টেস্ট খেলতে এসেছি এবং আমরা অবশ্যই নিজেদের সেরাটা দেয়ার জন্য মনোযোগী। আশা করছি, আমরা সিরিজ জয় করে ফিরে যেতে পারব।’ বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কোন ব্যাটসম্যানকে নিয়ে মনোযোগী না লিয়ন। যে ব্যাটসম্যান উইকেটে থাকবেন তার উইকেট নিতে দলগতভাবে ভাল বোলিংয়ের পরিকল্পনা অসিদের। লিয়ন দাবি করেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা স্পিনের বিরুদ্ধে বেশ ভাল। তিনি বলেন, ‘আমি কিউরেটরদের ব্যাপারগুলো কখনও বিবেচনা করিনি। শুধু জানি এটা আরেকটা ক্রিকেট উইকেট এবং তা উভয় দলের জন্যই। আমি সাহস নিয়ে শুধু বলতে পারি যে দলই টস জিতবে আগে ব্যাটিং করতে চাইবে। এটা উপমহাদেশে সাধারণ একটি নিয়ম। আমাদের দ্রুত কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে। আমরা নিজেদের মৌলিক কাজগুলো ঠিকভাবে করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এ চ্যালেঞ্জটা উপভোগ করতে চাই।’
শীর্ষ সংবাদ: