ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

সত্যি কি আছে এলিয়েন, তাদের বাহন কী আসছে পৃথিবীতে?

প্রকাশিত: ২৩:০০, ৭ আগস্ট ২০২৫

সত্যি কি আছে এলিয়েন, তাদের বাহন কী আসছে পৃথিবীতে?

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড কতটা বিশাল, তার কিছুটা ধারণা হয়তো মানুষ এতদিনে পেয়েছে। কিন্তু সেখানে ঠিক কত প্রাণের বসবাস—তা এখনো আমাদের অজানা। প্রতিদিন যখন আমরা রাতের আকাশে তাকাই, হাজারো নক্ষত্রের আলোয় চোখ ভরে যায়। আর তখনই মনের ভেতর জন্ম নেয় এক চিরন্তন প্রশ্ন—এই বিশাল মহাকাশে আমরা কি একা?

পৃথিবীতেও এমন অনেক সভ্যতার নিদর্শন এবং পুরাণের বর্ণনা আছে, যা ইঙ্গিত দেয়—বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অন্য অংশের সঙ্গে পৃথিবীর যোগাযোগ হয়তো এক সময়ে ছিল। এই প্রশ্নকে ঘিরেই আজকের গল্প অজানা উড়ন্ত বস্তু (UFO) নিয়ে—যা অনেকেই এলিয়েন বা ভিনগ্রহীদের বাহন বলেও দাবি করে থাকেন।

১৯৫০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী শুরু করে ‘প্রজেক্ট ব্লুবুক’ নামে একটি গবেষণা প্রকল্প। এই প্রকল্পে প্রায় ১২,০০০টির বেশি ইউএফও বা ইউএপি (Unidentified Aerial Phenomena) সংক্রান্ত ঘটনার তদন্ত করা হয়। যদিও বেশিরভাগ ঘটনার বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা মেলে, তবুও প্রায় ৭০০টির মতো ঘটনার কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা আজও পাওয়া যায়নি।

এখান থেকেই সামনে আসে এক গভীর ও দার্শনিক প্রশ্ন—ফার্মি প্যারাডক্স। এই তত্ত্বের ভিত্তি গড়েন ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী এনরিকো ফার্মি, যিনি ১৯৫০-এর দশকেই এক সাধারণ মধ্যভোজের সময় প্রশ্ন ছুড়ে দেন:
“তারা সবাই কোথায়?”
এই "তারা" বলতে বোঝানো হয় সম্ভাব্য এলিয়েন সভ্যতা।

বিজ্ঞানসম্মত হিসেবে, শুধু আমাদের ছায়াপথ মিল্কি ওয়ে-তেই প্রায় ৪০০ বিলিয়ন নক্ষত্র রয়েছে। তাদের অনেকগুলোর চারপাশে এমন গ্রহও রয়েছে, যেখানে প্রাণ থাকার উপযোগী পরিবেশ বিদ্যমান।

বিশ্বের নানা দেশেই ইউএফও সংক্রান্ত ঘটনার কথা শোনা যায় এবং এর কিছু ঘটনা ইতিহাসে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।
বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে ইউএফও দেখা যেন একটি সাংস্কৃতিক অধ্যায়।

আলোচিত কিছু ঘটনা:
রসওয়েল ইনসিডেন্ট (1947): ইউএফও ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা।

২০০৪ সালে সান ডিয়েগো উপকূলে ইউএস নেভির ভিডিও: একটি বস্তুর অস্বাভাবিক গতিবিধি দেখা যায়, যেটি প্রচলিত কোনও বিমানের সঙ্গে মেলে না। ভিডিওটি ২০২০ সালে প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী।

এরিয়া ৫১ ঘাঁটি: বহু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচলিত। অনেকের বিশ্বাস, এখানে ভিনগ্রহীয় প্রযুক্তি বা দেহ সংরক্ষিত রয়েছে।

অন্যান্য দেশের ঘটনার তালিকা:
ব্রাজিল, ১৯৭৭ - অপারেশন ট্রাট: বহু স্থানীয় বাসিন্দা রাতে আকাশে আলো, বিকট শব্দ ও অজানা বস্তু দেখার দাবি করেন। সামরিক তদন্তের নথিপত্র বহু বছর গোপন ছিল।

রাশিয়া, ভোরনেজ শহর, ১৯৮৯: স্থানীয়দের দাবি, একটি বড় গোলাকার যান নেমে আসে, এবং তার ভেতর থেকে মানবসাদৃশ কিছু প্রাণী বের হয়। সরকার প্রথমে বিষয়টি স্বীকার করলেও পরে নিশ্চুপ হয়ে যায়।

চীন, ২০১০ - পিকিং ও সানজি বিমানবন্দর: একাধিকবার অজানা উড়ন্ত বস্তুর কারণে ফ্লাইট বন্ধ রাখতে হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা ইউএফও দেখার কথা জানান।

ভারত, লাদাখ ও অরুণাচল প্রদেশ: সেনাবাহিনী একাধিকবার রাতের আকাশে অদ্ভুত বস্তুর গতিবিধি লক্ষ্য করে। ২০১৩ সালে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী আনুষ্ঠানিক তদন্ত চালালেও তার ফলাফল কখনো প্রকাশ পায়নি।

 

শেখ ফরিদ

×