
ছবি : সংগৃহীত
চুল পড়া এখন শুধু বয়সজনিত সমস্যা নয়, তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও ব্যাপক হারে বাড়ছে এই সমস্যা। অনেকেই বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করেও চুল পড়া রোধ করতে পারছেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মূল কারণ লুকিয়ে রয়েছে শরীরের ভেতরে—বিশেষ করে ভিটামিনের ঘাটতিতে।
কোন ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে?
ভিটামিন ডি’র ঘাটতি
চুল গজানোর জন্য প্রয়োজন নতুন ফলিকল তৈরি হওয়া। ভিটামিন ডি ঠিক এই কাজটাই করে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এখন দিনে প্রয়োজনীয় সময় সূর্যের আলোতে থাকেন না। ফলে ভিটামিন ডি’র ঘাটতি দেখা দেয়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে চুলের ওপর। চুল পড়তে শুরু করে এবং টাক হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
বায়োটিন বা ভিটামিন বি৭
চুল, ত্বক ও নখের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ভিটামিন। এর অভাবে চুল পাতলা হয়ে যায় এবং ঝরতে শুরু করে। বিশেষ করে যাঁরা বেশি কাঁচা ডিম খান, তাঁদের মধ্যে এই ভিটামিনের শোষণে সমস্যা হতে পারে।
ভিটামিন বি১২
রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। যখন এই ভিটামিনের ঘাটতি হয়, তখন চুলের গোড়ায় পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছায় না। ফলে চুল দুর্বল হয়ে যায় ও সহজেই পড়ে যায়। নিরামিষভোজীদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়।
ভিটামিন এ ও ই
ভিটামিন এ কোষের বৃদ্ধি ঘটায়, কিন্তু অতিরিক্ত গ্রহণ করলে উল্টো ফল হয়—চুল পড়ে যায়।
অন্যদিকে ভিটামিন ই চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ফলিকলকে মজবুত করে। এর অভাবে চুল দুর্বল হয়ে যায়।
কী করবেন?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ,
➡️ আগে রক্ত পরীক্ষা করে কোন ভিটামিনের ঘাটতি রয়েছে তা নিশ্চিত করুন।
➡️ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন।
➡️ ভিটামিন-সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, দুধ, পালংশাক, বাদাম, মাছ, কলা, মিষ্টিকুমড়ো এবং ধূলোবালি থেকে মুক্ত সূর্যের আলোতে কিছু সময় থাকুন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, "চুল পড়া কোনো সাধারণ সমস্যা নয়। এটি হরমোন, ভিটামিন ঘাটতি, মানসিক চাপ কিংবা জীবনযাত্রার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হতে পারে। তবে রক্তে ভিটামিন ডি, বি৭ বা বি১২-এর মাত্রা কমে গেলে দীর্ঘমেয়াদে টাক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই সতর্ক হওয়া জরুরি।"
চুল পড়া থামাতে শুধু বাহ্যিক যত্ন নয়, ভেতর থেকেও পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। সময় থাকতেই সতর্ক হলে টাক হওয়ার ভয় এড়ানো সম্ভব।
Mily