
ছবিঃ সংগৃহীত
আপনার বয়স ২০ বা ৮০—শরীরের এই একটি অঙ্গ সবসময়ই ‘তরুণ’ থাকে। আর সেটি হলো—লিভার।
একটি চমকপ্রদ বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, মানবদেহের লিভার বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বার্ধক্যের শিকার হয় না। বরং এটি গড়ে তিন বছরের কম বয়সে থেকে যায়, এবং তা পুরো জীবন জুড়েই। কারণ, লিভারের কোষগুলো নিয়মিতভাবে নিজেকে নবায়ন করে। গবেষকরা বলছেন, এই অনন্য বৈশিষ্ট্য লিভারকে রাখে চিরতরুণ।
জার্নাল Cell Systems-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় টেকনিকাল ইউনিভার্সিটি অব ড্রেসডেনের (TU Dresden) সেন্টার ফর রিজেনারেটিভ থেরাপিস (CRTD)-এর বিজ্ঞানীরা জানালেন, লিভার কোষগুলো প্রতি বছরই নতুন হয়, যা এই অঙ্গকে সবসময় তরতাজা রাখতে সাহায্য করে।
কীভাবে জানলেন গবেষকরা?
গবেষক ড. ওলাফ বার্গম্যানের নেতৃত্বে একদল জীববিজ্ঞানী, পদার্থবিদ, গণিতবিদ ও চিকিৎসক ২০ থেকে ৮৪ বছর বয়সী বহু মানুষের লিভার বিশ্লেষণ করেন। অবাক করা তথ্য—সবার লিভারের কোষ ছিল গড়ে একই বয়সী, তিন বছরেরও কম!
ড. বার্গম্যান বলেন, “আপনি ২০ বছর বয়সী হন বা ৮৪—আপনার লিভার গড়ে তিন বছরের কম বয়সেই থেকে যায়।”
তবে সব কোষ কি এত দ্রুত নবায়ন হয়?
না। যদিও বেশিরভাগ লিভার কোষ প্রতি বছর নতুন হয়ে যায়, কিছু কোষ ১০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এই কোষগুলোতে সাধারণের চেয়ে বেশি সংখ্যক ডিএনএ থাকে।
ড. বার্গম্যান ব্যাখ্যা করেন, “আমাদের শরীরের কোষে সাধারণত দুটি ক্রোমোজোম সেট থাকে। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে কিছু কোষে ৪, ৮ এমনকি আরও বেশি সেট জমা হতে পারে। এদের নবায়নের গতি ধীর, তবে এরা ক্ষতিকর মিউটেশন থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।”
মানবদেহে কোষ নবায়ন গবেষণার গুরুত্ব
এই গবেষণা প্রমাণ করেছে যে, মানবদেহে কোষ নবায়ন সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত জটিল হলেও এটি অঙ্গ পুনর্জন্ম (organ regeneration)-এর অন্তর্নিহিত প্রক্রিয়াগুলো বুঝতে সাহায্য করে।
ড. বার্গম্যান বলেন, “আমাদের গবেষণার মাধ্যমে বোঝা গেল, লিভারের কোষের বয়স কত, তা জানার জন্য নিখুঁত পদ্ধতি আবিষ্কার অত্যন্ত প্রয়োজন। এটি ভবিষ্যতে ক্রনিক লিভার ডিজিজ ও ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।”
ইমরান