
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বরিশাল জেলা দক্ষিণ শাখার আহ্বায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেন খান বলেছেন, “গত ১৬ বছর ধরে যারা স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে থেকেছে, মামলা-হামলার শিকার হয়েও দল ছাড়েনি, তাদেরই আমরা মূল্যায়ন করব। তবে সেই মূল্যায়ন হবে জনগণের রায় অনুযায়ী, ব্যক্তিগত পছন্দে নয়।”
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বাকেরগঞ্জের কবাই ইউনিয়নের শিয়ালঘুনি টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত বিএনপি’র ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “আমরা দলীয় আদর্শে আপস করব না। আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট কেউ বা অন্য দলের পদ-পদবিধারীরা বিএনপিতে আসতে পারবেন না। এটি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশ। কোনো নেতা যদি বহিরাগত কাউকে দলে আনে, তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হবে।”
রাজনীতির নীতিগত দিক তুলে ধরে আবুল হোসেন খান বলেন, “রাজনীতি সহজ নয়। টাকা থাকলেই নেতা হওয়া যায় না। তবে টাকা না থাকলেও যদি জনগণের পাশে থাকা যায়, তাহলে রাজনীতি সম্ভব। জনগণের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে হবে, বুঝতে হবে তারা কী চায়।”
তিনি আরও বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, আই উইল ব্যাক মাই টু ক্রিমিনাল এর মাধ্যমে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়াদের পুনরায় সুযোগ দিতে হবে যদি তারা জনগণের পক্ষে থাকে। আর যারা রাজনীতির নামে প্রতারণা করে, তাদের জন্যই তিনি বলেছিলেন, আই উইল মেইড টু ডিফিকাল্ট।”
তারেক রহমানের নেতৃত্বে চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “‘জুলাই আন্দোলন’ শুরু হলে, তারেক রহমানই প্রথম ‘হাসিনা তুই কবে যাবি, এই একদফা এক দাবি’ স্লোগান তোলেন। সেই আন্দোলন থেকেই মানুষের মাঝে নতুন জাগরণ শুরু হয়েছে। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এই সরকারের সময়ে। এই সংগ্রাম শুধুমাত্র সরকারের পতনের জন্য নয়, এটি জনগণের ভোট ও অধিকার রক্ষার আন্দোলন।”
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন অ্যাডভোকেট আবুল কালাম শাহীন, সদস্য সচিব, বরিশাল জেলা বিএনপি।
উদ্বোধক ছিলেন হারুন-অর-রশিদ জোমাদ্দার, আহ্বায়ক, বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেলিনা হোসেন বাবলী, নাসির জোমাদ্দার, কামরুজ্জামান মিজান, শাহাবউদ্দীন তালুকদার শাহীন, মো. নাসির উদ্দিন তালুকদার ও গাজী কাওছার আহম্মেদ মন্টু।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ৭ নম্বর কবাই ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মো. নাসির উদ্দিন তালুকদার এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব গাজী কাওছার আহম্মেদ মন্টু।
সম্মেলন ঘিরে ইউনিয়নজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। বিভিন্ন পদপ্রার্থীর ব্যানার-পোস্টারে সেজে ওঠে পুরো এলাকা।
ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন মো. কামরুল হাসান রুবেল (চেয়ার প্রতীক)। গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন গাজী কাওছার আহম্মেদ মন্টু (মাছ প্রতীক) এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন মো. মনিরুল হাসান মনির (টিউবওয়েল প্রতীক)।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা আশা প্রকাশ করেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপি’র ইউনিয়ন পর্যায়ের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী ও গতিশীল হবে।
মিমিয়া