ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

আগুনে পুড়ে মৃ’ত্যু: যে মর্যাদা ঘোষণা করেছে ইসলাম

প্রকাশিত: ১১:২২, ২৩ জুলাই ২০২৫

আগুনে পুড়ে মৃ’ত্যু: যে মর্যাদা ঘোষণা করেছে ইসলাম

ছবি: সংগৃহীত

মহান আল্লাহর রহমতের কোনো শেষ নেই। তিনি তাঁর বান্দাদের কখনো বিপদের মাধ্যমে, কখনো পরীক্ষার মাধ্যমে, আবার কখনো একেবারে অজানা কোনো উসিলায় মর্যাদায় অভিষিক্ত করেন। ইসলামী ব্যাখ্যায়, কেউ যদি আগুনে পুড়ে কিংবা কিছু নির্দিষ্ট দুর্ঘটনায় কষ্ট পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে আল্লাহ তাআলা তাকে বিশেষ মর্যাদা, তথা শহীদের মর্যাদা দান করেন।

এই বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন ইসলাম বিষয়ক গবেষক সৈয়দ নওশাদ।

হাদীস থেকে জানা যায়, হযরত জাবের বিন আতিক (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "আল্লাহর পথে জিহাদে নিহত হওয়া ছাড়াও আরও সাত শ্রেণির ব্যক্তি আছেন, যাঁরা শহীদের মর্যাদা লাভ করেন।" তাঁরা হলেন—

  • প্লেগ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণকারী,
  • পানিতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তি,
  • প্লুরিসি (ফুসফুসজনিত রোগ) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণকারী,
  • পেটের রোগে মারা যাওয়া ব্যক্তি,
  • আগুনে পুড়ে মৃত্যু বরণকারী,
  • ভারী কিছু চাপা পড়ে মৃত্যু বরণকারী,
  • সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যাওয়া নারী।

শহীদ হলেও গোসল ও জানাজার নিয়ম আলাদা
তবে ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী, যুদ্ধক্ষেত্রে ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের মত এই দুর্ঘটনাজনিত শহীদদের গোসল ও দাফনের নিয়ম স্বাভাবিকই থাকবে। অর্থাৎ, যেসব ব্যক্তি আগুনে পুড়ে বা অন্য দুর্ঘটনায় মারা যান, তাঁদের গোসল করানো হবে, কাফন পরানো হবে, এবং জানাজা পড়ে যথারীতি দাফন করা হবে।

আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়ার নিদর্শন
ইমাম নববী (রহ.) বলেন, “আলেমরা একমত যে, এ ধরনের মৃত্যুকে শহীদের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়ার ফল হিসেবে। কারণ, এসব মৃত্যুই অত্যন্ত কষ্টদায়ক এবং যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে ঘটে।”

এই হাদীস ও বিশ্লেষণ আমাদের শেখায় যে, মুসলমানের প্রতিটি কষ্ট, প্রতিটি পরীক্ষা — যদি তা ধৈর্যের সাথে আল্লাহর ওপর আস্থায় গ্রহণ করা হয় — তা হতে পারে মর্যাদার সোপান। মৃত্যুর ধরণ, যখন তা চরম যন্ত্রনার মধ্য দিয়ে হয়, তখন আল্লাহ তাতে এমন উচ্চ মর্যাদা দান করেন, যা একজন মুমিনের জন্য পরম আশার কথা।
 

শেখ ফরিদ 

×