
ছবি: সংগৃহীত
সাম্প্রতিক সময়ে মানুষ হত্যা যেন এক স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। অথচ ইসলাম ধর্মে মানুষ হত্যা সবচেয়ে বড় গুনাহ হিসেবে বিবেচিত। কোনো কারণ ছাড়াই একজন আরেকজনকে হত্যা করলে তার শাস্তি চিরস্থায়ী জাহান্নাম—এমন কঠিন ঘোষণা এসেছে পবিত্র কোরআনে। আর তাই কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বিচার হবে মানুষ হত্যার। বিস্তারিত জানিয়েছেন সিরাজুম মুনিরা বিলাসী।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে:
"যে ব্যক্তি মানুষ হত্যা কিংবা জমিনে সন্ত্রাস সৃষ্টির কারণ ব্যতীত কাউকে হত্যা করবে, সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করল। আর যে কোনো মানুষের প্রাণ বাঁচাবে, সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে বাঁচাল।" (সূরা মায়েদা, আয়াত: ৩২)
এ ব্যাপারে কিয়ামতের দিনে মানুষের হক সংক্রান্ত বিচারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আগে হবে হত্যার বিচার। আবদুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত একটি সহীহ হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
"কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম বিচার হবে হত্যা সংক্রান্ত বিষয়ে।" (সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম)
জঘন্য এই অপরাধের জন্য দুনিয়াতে যেমন শাস্তির বিধান রয়েছে, তেমনি পরকালেও রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি। যদি অনেক ব্যক্তি মিলে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে, তবে তাদের সবার জন্যই রয়েছে চিরস্থায়ী জাহান্নামের শাস্তি।
কিয়ামতের দিনে হত্যার শিকার ব্যক্তি নিজ হাতে তার হত্যাকারীকে ধরে আল্লাহর কাছে বিচারের জন্য হাজির করবে। ইবন আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
"কিয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি তার হত্যাকারীকে কপালের চুল ও মাথা ধরে নিয়ে আসবে। তার গলার কাটা রগ থেকে রক্ত প্রবাহিত হতে থাকবে। সে বলবে, ‘হে আমার রব! এ আমাকে হত্যা করেছে।’ এমনকি সে তাকে আল্লাহর আরশের কাছেও নিয়ে যাবে।"
ইসলামের দৃষ্টিতে, একজন নিরপরাধ মানুষের জীবন এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, তাকে হত্যা করা গোটা মানবজাতিকে হত্যার মতোই মারাত্মক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও হিংসা রোধে এই বার্তাই মানবতার জন্য সর্বোচ্চ শিক্ষা হয়ে উঠতে পারে।
শেখ ফরিদ