ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২

যে কারণে জমির মালিকানা হবে হাতছাড়া, জানুন নতুন আইন

প্রকাশিত: ২৩:৩৬, ২২ জুলাই ২০২৫

যে কারণে জমির মালিকানা হবে হাতছাড়া, জানুন নতুন আইন

ছবি: সংগৃহীত

 

ভূমি ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সংস্কারে এগোচ্ছে সরকার। ভূমি মালিকদের জন্য চালু করা হচ্ছে ভূমি মালিকানা সনদ (Certificate of Land Ownership – CLO), যা হবে স্মার্ট কার্ড আকারে ডিজিটাল দলিল। এতে থাকবে কিউআর কোড বা ইউনিক নম্বর, এবং এটি হবে জমির মালিকানা নির্ধারণে চূড়ান্ত দলিল।

এই কার্ডের মাধ্যমে জমির খাজনা (ভূমি উন্নয়ন কর) অনলাইনে পরিশোধ করা যাবে। একই সঙ্গে জমি নিয়ে জালিয়াতি, অবৈধ দখল ও মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিনের মামলা জট নিরসনে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

৩ বছর খাজনা না দিলে জমি বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে

নতুন প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, টানা তিন বছর খাজনা না দিলে জমিটি বাজেয়াপ্ত হয়ে সরকারিভাবে খাস খতিয়ানে চলে যাবে।

অবৈধ দখল বা জালিয়াতিতে জেল ও জরিমানা

জমি সংক্রান্ত জালিয়াতি, জাল দলিল তৈরি বা অবৈধ দখলে থাকলে দুই বছর পর্যন্ত জেল বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (আইন) মো. খলিলুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন,
“এই সনদই হবে চূড়ান্ত মালিকানা দলিল। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর এটি কার্যকর হবে।”

 

কৃষিজমি অধিগ্রহণে কড়া বিধিনিষেধ

খসড়া আইন অনুযায়ী:

  • দুই বা তিন ফসলি জমি সাধারণভাবে অধিগ্রহণ করা যাবে না
  • জনস্বার্থে প্রয়োজন হলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে
  • সরকারি অনুমতি ছাড়া কৃষিজমির শ্রেণি পরিবর্তন (যেমন: আবাসিক বানানো) সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
  • ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন, নামজারি ও হালনাগাদ বাধ্যতামূলক
  • জমির মালিকানা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে CLO স্মার্ট কার্ড হালনাগাদ করতে হবে
  • জমি হস্তান্তরের পর নামজারি করাতে হবে
  • নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করতে হবে

 

গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ:

  • ভূমি মালিকদের জন্য ইউনিক নম্বরযুক্ত স্মার্ট কার্ড
  • ৩ বছর খাজনা না দিলে জমি বাজেয়াপ্ত
  • অবৈধ দখলে ২ বছরের জেল বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা
  • কৃষিজমি রক্ষায় কঠোর আইন
  • নামজারি, খাজনা ও শ্রেণি পরিবর্তনে নিয়মিত হালনাগাদ বাধ্যতামূলক

এই নতুন ভূমি আইন ও স্মার্ট কার্ড চালুর মাধ্যমে দেশে জমির স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হবে। জাল দলিল, জমি দখল বা মালিকানা নিয়ে সংঘাত কমবে এবং সাধারণ মানুষ জমির মালিকানা বিষয়ে আরও বেশি নিরাপদ ও সচেতন হবেন।

আঁখি

×