
একজন ব্যক্তি যখন একইসঙ্গে দলের প্রধান, সংসদ নেতা এবং সরকারের প্রধান হন, তখন তার হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়, যা স্বৈরাচারী আচরণের ঝুঁকি তৈরি করে এই যুক্তিকে সামনে রেখে ঐক্যমত কমিশনের পক্ষ থেকে গঠিত সংবিধান ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন সম্প্রতি একটি সুস্পষ্ট প্রস্তাব উত্থাপন করেছে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী যে হবেন, তিনি দলীয় প্রধানের পদে থাকতে পারবেন না। এ প্রস্তাব নিয়ে বিরোধী দল বিএনপি এবং কয়েকটি রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক অধিকারের যুক্তি তুলে ধরে আপত্তি জানালেও সিংহভাগ দল এর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। কমিশন সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন, তিনি দলের প্রধান হবেন না এ বিষয়ে সনদ স্বাক্ষরের সময় কোনো পক্ষ ‘নোট অফ ডিসেন্ট’ দিতে পারবে না।
কমিশনের ১৭তম বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পদ্ধতি নিয়ে। আগের সার্চ কমিটির পরিবর্তে সরকার, বিরোধী দল এবং সংসদের তৃতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল এই তিন পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের প্রস্তাবে ঐকমত্য তৈরি হয়।
এই কমিটি সরকারি দল থেকে পাঁচ জন, বিরোধী দল থেকে পাঁচ জন এবং তৃতীয় বৃহৎ দল থেকে দুইজন প্রার্থীর নাম জমা নেবে। প্রার্থীদের মধ্য থেকে ঐক্যমতের ভিত্তিতে একজনকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হবে।
এখানে কমিশন “ক্রস চয়েস” এবং “র্যাংক চয়েস” পদ্ধতির সুপারিশ দিলেও বিএনপি ও জামায়াত পক্ষ নিয়েছে ১৩তম সংশোধনীর ভিত্তিতে বিচারপতি নিয়োগ পদ্ধতির। ঐক্যমত না হলে কমিশন চূড়ান্তভাবে সেই সংশোধনী অনুসরণ করার কথা বলেছে। তবে সেখানে রাষ্ট্রপতির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা রাখা হবে না এটা বিলুপ্ত হবে বলেও জানানো হয়।
ঐক্যমত কমিশনের সহসভাপতি আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতের অধিবেশনে দ্বিধাগ্রস্ত দলগুলোর মতামত পরিবর্তনের মাধ্যমে এই ইস্যুতেও সমঝোতায় পৌঁছানো যাবে। তার মতে, র্যাংক চয়েস পদ্ধতি অনুসরণ করলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে না।
এই বৈঠকে আরও আলোচনা হয় ইসি, দুদকসহ পাঁচটি কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে, তবে তা শেষ করা সম্ভব হয়নি।
Jahan