
ছবি: সংগৃহীত
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ঘিরে যখন আন্তর্জাতিক চাপ চরমে, তখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে সরাসরি বার্তা পাঠালেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। রোববার ক্রেমলিনে পুতিনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন খামেনির পরমাণু বিষয়ক উপদেষ্টা আলী লারিজানি। এরপরই আরও কঠোর অবস্থানে চলে যায় ইরান।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ নিশ্চিত করেছেন, বৈঠকে ইরানের পরমাণু প্রকল্প এবং মধ্যপ্রাচ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। পেসকভ জানান, রাশিয়া এই ইস্যুতে রাজনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজছে, তবে ইরান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—তারা তাদের পারমাণবিক অধিকার থেকে সরে আসবে না।
মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানান, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ করবে না। কারণ এটি তাদের ‘নিজস্ব বিজ্ঞানীদের অর্জন’ এবং ‘জাতীয় গর্বের উৎস’। তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতের যেকোনো পারমাণবিক চুক্তিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার থাকতে হবে।’
তবে আরাঘচি স্বীকার করেন, সম্প্রতি মার্কিন হামলায় ইরানের কিছু পরমাণু কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে আপাতত সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। তিনি জানান, পরমাণু শক্তি সংস্থা এখন ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ পরিমাণ মূল্যায়ন করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বুশেহর নির্মাণ ও পরিচালনায় রাশিয়ার ভূমিকা থাকায় এই পরিস্থিতিতে পুতিনের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচির জন্য জ্বালানি ও প্রযুক্তি সরবরাহ করে থাকে মস্কো।
আগামী শুক্রবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় বসছে ইরান। তার আগেই তেহরান নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে—সমৃদ্ধকরণ অধিকার ছাড়া কোনো সমঝোতা নয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা সম্ভব হলেও, এখনই সে পথে হাঁটতে চায় না ইরান।
পশ্চিমাদের ক্রমাগত চাপ ও নিষেধাজ্ঞার মুখে এবার রাশিয়া ও পুতিনের সহায়তা চেয়ে কঠোর বার্তা দিল তেহরান। রাজনৈতিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাইলেও নিজেদের পারমাণবিক অধিকার ছাড় দিতে মোটেও রাজি নয় ইরান।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=ztSN01hx_oE
রাকিব