
ছবি: প্রতীকী
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী সাফল্য অর্জিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে চিকিৎসকরা সফলভাবে অস্ত্রোপচারের টেবিলে এক মৃত হৃদপিণ্ড পুনরুজ্জীবিত করে তা তিন মাস বয়সী এক শিশুর শরীরে প্রতিস্থাপন করেছেন। ‘অন-টেবিল রিএনিমেশন’ নামে পরিচিত এই পদ্ধতিতে দাতার শরীরের বাইরে একটি বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে হৃদপিণ্ডটি জীবিত করে তোলা হয়।
অপারেশনের ছয় মাস পর শিশুটি সম্পূর্ণ সুস্থ আছে, তার হৃদপিণ্ড স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে এবং কোনো ধরনের অঙ্গ বিকালঙ্গের লক্ষণ দেখা যায়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কৌশল অঙ্গদানের পরিধি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারে, যা হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষমাণ অনেক শিশুর জন্য আশার আলো।
এই পদ্ধতির গবেষক ডা. অ্যারন উইলিয়ামস বলেন, ‘এই পদ্ধতিটি প্রচলিত পদ্ধতির মতোই কার্যকর হলেও অনেক সহজ এবং খরচও তুলনামূলকভাবে কম। এটি বিশ্বজুড়ে অঙ্গ সংরক্ষণ প্রযুক্তিকে আরও সহজলভ্য করে তুলবে এবং ডোনেশন আফটার সার্কুলেটরি ডেথ (DCD) হৃদপিণ্ড ব্যবহারের সুযোগ বাড়াবে।’
তিনি আরও বলেন, “হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে এটি আগে কখনো সফলভাবে করা যায়নি। এটি একটি ‘গেম চেঞ্জার’। বিশ্বব্যাপী এই পদ্ধতির ব্যাপক প্রয়োগ সম্ভব।”
তবে এই পদ্ধতি কিছু নৈতিক প্রশ্নও উত্থাপন করেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সার্কুলেটরি ডেথ বা রক্তসঞ্চালন বন্ধ হওয়ার পর হৃদপিণ্ড পুনরুজ্জীবিত করার নৈতিকতা নিয়ে। এই বিতর্ক এড়াতে ভেন্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি সার্জন দল বিকল্প একটি পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছে, যেখানে হৃদপিণ্ড পুনরুজ্জীবিত না করেই সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে শিশুদের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে এই নতুন পদ্ধতি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
সূত্র: এনডিটিভি।
রাকিব