
ছবি: প্রতীকী
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়মিতভাবে ঘটে চলেছে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত। হঠাৎ হওয়া এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রাণহানির আশঙ্কা তৈরি করলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা আগে থেকে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। বহু বছর ধরেই বিজ্ঞানীরা এই রহস্য ভেদ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার অস্ট্রেলিয়ার গবেষকেরা আগ্নেয়গিরির সম্ভাব্য উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেছেন পৃথিবীর গহীনের এক রহস্যময় অঞ্চল—যা ‘ব্লব’ নামে পরিচিত।
গবেষকদের দাবি, ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ মাইল বা প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার নিচে অবস্থিত এই ব্লব অঞ্চলই হতে পারে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের প্রধান কারণ। এই অঞ্চলগুলো পৃথিবীর অভ্যন্তরে বিস্তৃত এবং এর ব্যাপ্তি মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতার চেয়েও প্রায় ১০০ গুণ বেশি।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ব্লব হলো একধরনের গলিত শিলা ও গ্যাসে পূর্ণ অঞ্চল, যেখান থেকে ভয়ঙ্কর মাত্রায় লাভা, তাপ ও শিলাখণ্ড নির্গত হয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল মনে করেন, এই ব্লব অঞ্চলগুলো লাখ লাখ বছর ধরে পৃথিবীর অভ্যন্তরে বিদ্যমান।
তাঁদের গবেষণা বলছে, ব্লবগুলো পৃথিবীর সবচেয়ে পুরু স্তর ম্যান্টেলের নিচে অবস্থান করছে। যদিও ম্যান্টেল প্রধানত কঠিন শিলার তৈরি, তবুও এই ব্লব অঞ্চল হতে পারে অপেক্ষাকৃত আলাদা গঠনের। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্লবগুলো স্থান পরিবর্তন করে এবং 'ম্যান্টেল প্লাম' নামক গঠন কাঠামোর মাধ্যমে পৃথিবীর পৃষ্ঠের দিকে এগিয়ে আসে।
গবেষকেরা আরও জানিয়েছেন, পৃথিবীর যেসব স্থানে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত হয়, সেগুলোর ঠিক নিচেই এই ব্লব অঞ্চলগুলোর অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, আগ্নেয়গিরির ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতের মূল উৎস আসলে এই গভীরের ব্লব অঞ্চল।
এই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার আগ্নেয়গিরির আচরণ বুঝতে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বলে মনে করছেন ভূবিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে অগ্ন্যুৎপাতের পূর্বাভাস দিতে আরও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে এই গবেষণা।
সূত্র: ডেইলি মেইল।
রাকিব