ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২

বিশ্বের প্রথম শিশু হিসেবে দ্বিতীয়বার পৃথিবীতে এসে ইতিহাস সৃষ্টি!

প্রকাশিত: ১৫:৪৮, ২২ জুলাই ২০২৫

বিশ্বের প্রথম শিশু হিসেবে দ্বিতীয়বার পৃথিবীতে এসে ইতিহাস সৃষ্টি!

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান চিকিৎসাশাস্ত্র পুরোপুরি বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল এবং এর ফলে প্রতিনিয়তই বাস্তবায়িত হচ্ছে অভাবনীয় সব সাফল্য। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে ঘটে এমনই এক বিস্ময়কর ঘটনা, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানকে পৌঁছে দেয় এক নতুন উচ্চতায়। বিশ্বের চিকিৎসা ইতিহাসে জায়গা করে নেয় এক ছোট্ট শিশুকন্যা— লিনলি হোপ বুয়েমার।

লিনলির মা মার্গারেট হকিংস বুয়েমার যখন মাত্র ১৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা, তখন চিকিৎসকরা জানান যে গর্ভের অনাগত কন্যা শিশু একটি বিরল ও জটিল টিউমার Sacrococcygeal Teratoma (সাক্রোকক্সিজিয়াল টেরাটোমা)-তে আক্রান্ত। টিউমারটি শিশুটির মেরুদণ্ডের গোড়ায় অবস্থান করে তার শরীর থেকে রক্ত শোষণ করছিল, যা সরাসরি তার হৃদযন্ত্র বিকলের ঝুঁকি তৈরি করে।

 

 

জটিল এই পরিস্থিতিতে টেক্সাস চিলড্রেনস ফিটাল সেন্টারের একদল সাহসী ও দক্ষ চিকিৎসক ব্যতিক্রমী এক সিদ্ধান্ত নেন। ২৩ সপ্তাহের গর্ভকাল পূর্ণ হওয়ার পর, তাঁরা গর্ভে থাকা লিনলিকে জরায়ু থেকে বের করে এনে সফল অস্ত্রোপচার করেন। অপারেশনের পর আবারও শিশুটিকে মায়ের গর্ভে স্থাপন করা হয়। অস্ত্রোপচারের সময় লিনলির ওজন ছিল মাত্র ১ পাউন্ড ৩ আউন্স।

এরপর আরও ১২ সপ্তাহ গর্ভে বেড়ে উঠে নির্ধারিত সময়েই লিনলি পৃথিবীর আলো দেখে। সিজারিয়ানের মাধ্যমে তার জন্ম হয়, তখন তার ওজন ছিল ৫ পাউন্ড ৫ আউন্স। জন্মের মাত্র ৮ দিন পর আরেকটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অবশিষ্ট টিউমারটিও অপসারণ করা হয়।

 

 

বর্তমানে লিনলি হোপ পুরোপুরি সুস্থ, এবং স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠছে। এই কাহিনী আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক অনন্য নজির— যেখানে মানবজ্ঞান, প্রযুক্তি ও সাহসিকতা একত্র হয়ে নতুন করে জীবন দিয়েছে এক শিশুদের দেবতাকে।
 

ছামিয়া

×