
ছবি: সংগৃহীত।
সন্তানকে সঠিকভাবে বড় করে তোলা কোনও সহজ কাজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন ধৈর্য, বোঝাপড়া এবং সময়োপযোগী আচরণ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অনেক সময় অভিভাবকদের কিছু নির্দিষ্ট অভ্যাস সন্তানের আত্মবিশ্বাস ও মানসিক দৃঢ়তার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
পেরেন্টিং কনসালট্যান্টদের মতে, সন্তানের মনোবল অটুট রাখতে হলে বাবা-মায়েদের কয়েকটি অভ্যাসে পরিবর্তন আনা জরুরি। নচেত সন্তান আত্মকেন্দ্রিকতা, হতাশা বা অবসাদের দিকেও ধাবিত হতে পারে।
যে ৫টি অভ্যাসে বদল আনা প্রয়োজন:
১. স্নেহের অভাব:
অনেক বাবা-মা মনে করেন, অতিরিক্ত স্নেহ দেখালে সন্তান দুর্বল হয়ে পড়বে। ফলে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে কঠোর মনোভাব দেখান। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কৌশল কিছু ক্ষেত্রে কার্যকর হলেও, অধিকাংশ সময় এতে সন্তানের মধ্যে একাকীত্ব ও মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়। এতে আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
২. অন্যদের সঙ্গে তুলনা:
নিজের সন্তানের সঙ্গে অন্য বাচ্চাদের তুলনা করা খুবই ক্ষতিকারক। এতে শিশুর মধ্যে হীনমন্যতা জন্মায়। তার পরিবর্তে সন্তানের ভুল-ত্রুটি গঠনমূলকভাবে ব্যাখ্যা করা উচিত, যাতে সে নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারে।
৩. অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ:
অনেক সময় বাবা-মায়েরা সন্তানের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেন। চলাফেরার স্বাধীনতা কমিয়ে দেন। অথচ, শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য স্বাধীনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীনতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি, না হলে তা সন্তানের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করতে পারে।
৪. মতামতের গুরুত্ব না দেওয়া:
শিশুদের মতামত সব সময় ঠিক না-ও হতে পারে। তবে বাবা-মায়েদের উচিত সন্তানের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা। এতে শিশুর মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে। যদি বারবার তাদের মতামত অগ্রাহ্য করা হয়, তা হলে তারা নিজেকে তুচ্ছ ভাবতে শুরু করে।
৫. অতিরিক্ত প্রত্যাশা:
প্রত্যেক অভিভাবকই চান তাদের সন্তান শ্রেষ্ঠ হোক। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতিও মাথায় রাখা দরকার। কোনও কারণে সন্তান যদি কাঙ্ক্ষিত ফল দিতে না পারে, তাহলে অতিরিক্ত প্রত্যাশা তার উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি এটি মানসিক অবসাদের কারণও হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সচেতন অভিভাবকত্ব মানেই শুধু নিয়মকানুন চাপিয়ে দেওয়া নয়, বরং সন্তানের মানসিক চাহিদাও বোঝা। সন্তানকে স্নেহ, উৎসাহ এবং গ্রহণযোগ্যতা দেওয়া অভিভাবকদের অন্যতম দায়িত্ব।
মিরাজ খান