
লিভার
লিভার আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা প্রতিদিন শতাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে—ডিটক্সিফিকেশন থেকে শুরু করে হজম ও শক্তি সংরক্ষণ পর্যন্ত। কিন্তু লিভার রোগ অনেক সময় কোনো সুস্পষ্ট উপসর্গ ছাড়াই ধীরে ধীরে শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে শুরু করে। তাই নীরব এই রোগের লক্ষণগুলো জানা ও প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
⚠️ লিভার রোগের নীরব উপসর্গসমূহ:
১. দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি ও দুর্বলতা:
কোনো কারণ ছাড়াই যদি সবসময় দুর্বল বোধ করেন, তা হতে পারে লিভার সমস্যার সূচনা।
২. ক্ষুধামান্দ্য বা হঠাৎ ওজন হ্রাস:
খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া বা অকারণে ওজন কমে যাওয়া লিভারের অকার্যকারিতার ইঙ্গিত হতে পারে।
৩. পেটে অস্বস্তি বা ফাঁপা ভাব:
বিশেষ করে ডান পাশের উপরের পেটে হালকা চাপ বা অস্বস্তি অনুভূত হলে তা উপেক্ষা করবেন না।
৪. গাঢ় রঙের মূত্র বা ফ্যাকাসে মল:
বাইল প্রক্রিয়ায় সমস্যা হলে এমন পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।
৫. চুলকানি বা সহজে রক্তপাত/কালশিটে পড়া:
লিভার কম প্রোটিন তৈরি করলে রক্ত জমাট বাঁধতে সমস্যা হতে পারে।
৬. জন্ডিস (চোখ বা ত্বক হলুদ হওয়া):
এটি লিভার রোগের অপেক্ষাকৃত দেরিতে প্রকাশ পাওয়া একটি সাধারণ লক্ষণ।
✅ লিভার রোগ প্রতিরোধে করণীয়:
১. অ্যালকোহল সেবন সীমিত করুন:
অতিরিক্ত অ্যালকোহল লিভারের সবচেয়ে বড় শত্রু।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন:
স্থূলতা নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের (NAFLD) ঝুঁকি বাড়ায়।
৩. অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন বন্ধ করুন:
বেশি প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ লিভারের ক্ষতি করতে পারে।
৪. হেপাটাইটিস প্রতিরোধে টিকা নিন:
হেপাটাইটিস এ ও বি ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকর।
৫. লিভার-বান্ধব খাবার খান:
পালংশাক, হলুদ, রসুন, বেরি ফল এবং গ্রিন টি লিভার ভালো রাখতে সাহায্য করে।
৬. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন:
ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল বা পারিবারিক ইতিহাস থাকলে বিশেষ সতর্কতা দরকার।
লিভার রোগ যখন ধরা পড়ে, তখন অনেক সময় অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই সময় থাকতে নীরব উপসর্গগুলোকে গুরুত্ব দিন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিশ্চিত করুন।
https://www.independent.co.uk
তাসমিম