ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২

মহেশপুর সীমান্তে ৭ মাসে ৩০ কোটি টাকার অবৈধ পণ্য জব্দ

ওমর ফারুক, ঝিনাইদহ, খুলনা

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ২১ জুলাই ২০২৫

মহেশপুর সীমান্তে ৭ মাসে ৩০ কোটি টাকার অবৈধ পণ্য জব্দ

 

সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালান ও মানবপাচার প্রতিরোধে রেকর্ড সাফল্য অর্জন করেছে ঝিনাইদহের মহেশপুরে অবস্থানরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৫৮ বিজিবি)। গত ৭ মাসে ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩০ কোটি টাকার অবৈধ মাদক, অস্ত্র, সোনা ও চোরাই পণ্য জব্দ করেছে তারা। একই সময়ে বিভিন্ন অপরাধে ২ হাজার ১৬৮ জনকে আটক করা হয়েছে।

বিজিবি সূত্র জানায়, সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করায় চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার সময় এক হাজার ১৩৮ জন এবং ভারত থেকে আসার সময় ৯৭৯ জন অনুপ্রবেশকারীকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ১৮ জন ভারতীয় নাগরিক রয়েছে। এছাড়া মানবপাচারে জড়িত সন্দেহে ৩৩ জন দালালকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে শংকর অধিকারী নামে একজন ভারতীয় পাচারকারীও রয়েছে।

৫৮ বিজিবির উপ-অধিনায়ক, অতিরিক্ত পরিচালক আবু হানিফ মোঃ সিহানুক জানান, জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়কালে মহেশপুর ব্যাটালিয়ন ৭ হাজার ৯২০ বোতল বিদেশি মদ, ৯ হাজার ৫১৭ বোতল ফেনসিডিল, ৬৮ কেজি গাঁজা, ৪৫ হাজার ৫৪৫টি ইয়াবা, ৫ কেজি ১১ গ্রাম কোকেন, ৬ কেজি ৪০৫ গ্রাম হেরোইনসহ বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ ওষুধ উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত এসব মাদকের বাজারমূল্য প্রায় ২৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা।

তিনি আরও জানান, ২০২৫ সালের ১৭ মার্চ থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত সময়ে পাঁচটি পৃথক অভিযানে মোট ৩ কেজি ৬৫৪ গ্রাম সোনা উদ্ধার করা হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। এছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে ২টি বিদেশি পিস্তল, ৪টি দেশি ওয়ান শুটারগান এবং ১৪ রাউন্ড গুলি।

অন্যদিকে, যৌথ টাস্কফোর্স অভিযানে ভারতীয় পণ্য পাচার ঠেকাতে আরও সাফল্য এসেছে। অভিযানে ৯০ লাখ টাকা মূল্যের ভারতীয় শাড়ি, শাল, থ্রি-পিস, চায়না জাল এবং মদ উদ্ধার করা হয়েছে। একইসঙ্গে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে সীমান্ত দিয়ে গরু ও কোরবানির চামড়া পাচার ঠেকাতে ছিল বিজিবির কঠোর নজরদারি। ফলে কোনো ধরনের গরু পাচার বা ঈদের পর চামড়া পাচারের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত মে মাসে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ অবৈধভাবে ভারতে অবস্থানকারী ৫২ জন বাংলাদেশিকে ‘পুশ-ইন’ করলেও পরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে ১৮৬ জনকে শান্তিপূর্ণভাবে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এই প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পরিচালক আবু হানিফ মোঃ সিহানুক বলেন, “সীমান্তরক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান ও মানবপাচার প্রতিরোধে আমাদের কার্যক্রম আরও জোরদার করা হচ্ছে। ভবিষ্যতেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

শেখ ফরিদ 

×