
ছবি: সংগৃহীত
বিপুল বিক্রমে সংকেত পাওয়া মাত্র উড়লো এটি। আর এর মাধ্যমে এলো চমকে ওঠা এক খবর। চীন নিয়ে এলো এমন এক হাইপারসনিক মিসাইল যা যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে এক মিনিটও সময় নেবে না। সি জিনপিং এর দেশ এমন একটি হাইপারসনিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা শেষ করেছে যা নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপড় চলছে। ফেইথিয়ান টু নামের এই মিজাইল ঘণ্টায় ১৪,৮০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। প্রচলিত হাইপারসনিক মিসাইলের গতিসীমা সাধারণত শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। অন্যদিকে ফেইথিয়ান টু চলবে শব্দের চাইতে ১২ গুণ বেশি গতিতে।
চীনা গণমাধ্যমগুলো বলছে, ফেইথিয়ান টু-তে রকেট ও র্যামজেট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। রকেট ইঞ্জিনে সাধারণত জ্বালানি ও অক্সিডাইজার দুটো আলাদা ট্যাংকে বহন করা হয়। এই দুটি উপাদান একত্রে চললে তৈরি হয় তীব্র গরম গ্যাস, যা ইঞ্জিনের এক্সজস্ট দিয়ে প্রচণ্ড বেগে নির্গত হয়ে থ্রাস্ট বা ধাক্কা তৈরি করে। এতেই একটি আকাশযান বা মহাকাশযান সামনের দিকে গতি পায়।
এক ধরনের ইঞ্জিন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরেক ধরনের ইঞ্জিন চালু হওয়ার সক্ষমতা অর্জন বিশ্বেই প্রথম বলেও দাবি করছে বেইজিং।
ফেইথিয়ান টু এর সফল পরীক্ষায় উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। চীন কোন বিধ্বংসী অস্ত্র বানালেই সেদিকে চোখ থাকে পশ্চিমাদের। প্রযুক্তিগতভাবে চীনের অগ্রগতি ঠেকাতে অনেক চীনা প্রতিষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হাইপারসোনিক মিসাইল তৈরিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তির সংখ্যা দেখিয়ে ২৭টি চীনা প্রতিষ্ঠানকে মার্কিন AI ও অ্যাডভান্সড কম্পিউটিং সরবরাহকারীদের সঙ্গে ব্যবসা করতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এর জবাবে ফেইথিয়ান টু’র সফল পরীক্ষা চীনের প্রযুক্তিগত সক্ষমতার আরেকটি বড় প্রমাণ হিসেবে দেখছেন সমর বিশেষজ্ঞরা। এই দুই ধরনের ইঞ্জিনকে একসাথে কাজ করানো খুব জটিল। এর চেয়েও কঠিন হলো চলন্ত অবস্থায় এক প্রপালশন সিস্টেম থেকে অন্যটিতে নির্বিঘ্নে স্থানান্তর ঘটানো। এই কাজই ফেইথিয়ান টু সফলভাবে করতে পেরেছে বলে দাবি করেছে বেইজিং।
চীনা গবেষকদের দাবি, ফেইথিয়ান টু স্বয়ংক্রিয়ভাবে রকেট থেকে র্যামজেট প্রপালশনে স্থানান্তরিত হতে পেরেছে এবং সেই সময়ে উচ্চগতির ক্রাফটে সৃষ্ট তীব্র তাপ ও চাপও সহ্য করতে সক্ষম হয়েছে। এই প্রযুক্তির সামরিক গুরুত্ব অনেক। মার্কিন কংগ্রেশনাল বাজেট অফিস ২০২৩ সালে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করে বলেছে যে, হাইপারসনিক অস্ত্রের লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করা প্রতিপক্ষের জন্যে খুব কঠিন। এটি কম উচ্চতায় উঠতে পারায় দীর্ঘ পাল্লার রাডারের বাইরে থাকে।
এছাড়া চলাচলের পথ অনির্ধারিত থাকায় শনাক্ত করাও কঠিন। এছাড়া হাইপারসনিক অস্ত্র লক্ষ্যবস্তুর কাছাকাছি পৌঁছানোর আগ মুহূর্তে মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতেও পারদর্শী।
শেখ ফরিদ