
ছবি: সংগৃহীত
গাজা উপত্যকায় এখন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। ইসরাইলি বাহিনীর দখলদার আগ্রাসনে পুরো অঞ্চল পরিণত হয়েছে এক ধ্বংসস্তূপে। যা কিছু অবকাঠামো এক সময় দৃশ্যমান ছিল, এখন তা মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে একে একে। এই মানববিরোধী ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও বিস্তৃত হচ্ছে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর তথাকথিত “স্বপ্নের বিলাস প্রকল্প”। গাজা উপত্যকাকে মানবশূন্য করে সেখানে এক বিলাসবহুল বসতি গড়ে তুলতেই যেন উঠেপড়ে লেগেছে দখলদার ইসরাইল।
এই বিপর্যয়ের দৃশ্য দেখেও নিরুত্তাপ রয়েছে আরব বিশ্বের অনেক রাষ্ট্র। বন্ধুত্বের খাতিরে কেউ নিচ্ছে না কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। তবে গাজায় মুসলিম ভ্রাতাদের পাশে চুপ করে নেই যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি রাষ্ট্র—ইয়েমেন।
ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বরাবরের মতো এবারও বজ্রকণ্ঠে আওয়াজ তুলেছে ইয়েমেন। দেশটির গ্র্যান্ড মুফতি শেখ শামস আল-দ্বীন সারাফ আল-দ্বীন বলেছেন, “এই নৃশংস গণহত্যার সামনে নীরব থাকা আর সমীচিন নয়।” রাজধানী সানায় রোববার এক বক্তব্যে তিনি বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানান, “নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব পালনে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে হবে। গাজার বিপন্ন, অনাহারী মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যারা আল্লাহর নিকট জবাবদিহির চেয়ে পশ্চিমাদের চাপকে বেশি ভয় পায়, তারা ভ্রান্তপথে চলেছে। যতদিন আলেমরা ভয়ের দেয়াল ভেঙে দায়িত্ব পালন না করবেন, ততদিন দখলদারদের আগ্রাসন থামবে না, আমেরিকান আধিপত্য রোধ করা সম্ভব হবে না।”
শুধু মৌখিক প্রতিবাদেই থেমে থাকেনি ইয়েমেন। গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের শুরুর পর থেকেই দখলদারদের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী। লোহিত সাগরে ইসরাইল ও তার মিত্রদের কাছে এখন আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে এই গোষ্ঠীটি। তাদের বক্তব্য—“যতদিন পবিত্র ভূখণ্ড ইসরাইলি সেনা ও আগ্রাসনমুক্ত না হবে, ততদিন চলবে আমাদের প্রতিরোধ।”
এদিকে ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রধান আব্দুল মালিক বদর আল-দ্বীন আল হুতি বলেছেন, “গাজায় লাখ লাখ মানুষ চরম ক্ষুধা ও অবরোধে দিন কাটাচ্ছে। অথচ ২০০ কোটিরও বেশি মুসলমান, যারা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছে, কিছুই করছে না।”
এই অবস্থার পটভূমিতে ইয়েমেন হয়ে উঠছে একটি প্রজ্জ্বলিত প্রতিবাদের মশাল, যেখানে ধর্মীয় দায়িত্ব ও ন্যায়ের পক্ষের অবস্থান স্পষ্ট করে তুলছে একবারেই স্পষ্ট ভাষায়—ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে।
শেখ ফরিদ