
ছবি: সংগৃহীত
হার্ট ক্যানসার বা হৃদযন্ত্রে টিউমার—এটি একটি বিরল তবে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। এতে হৃদযন্ত্রে অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধি ঘটে, যা একপর্যায়ে টিউমারে রূপ নেয়। এই ক্যানসার দুই ধরনের হতে পারে—প্রাইমারি (মূল) এবং সেকেন্ডারি (গৃহীত)। প্রাইমারি টিউমার সরাসরি হৃদপিণ্ডে উৎপত্তি ঘটায়, যেখানে সেকেন্ডারি টিউমার শরীরের অন্য কোনো অংশ থেকে হৃদপিণ্ডে ছড়িয়ে পড়ে।
হার্ট ক্যানসারের উপসর্গগুলো কী কী?
হার্ট ক্যানসারের লক্ষণগুলো টিউমারের অবস্থান, আকার এবং ধরন অনুসারে ভিন্ন হতে পারে। তবে সাধারণত নিচের উপসর্গগুলো দেখা যায়:
- বুকের ব্যথা
- অনিয়মিত হার্টবিট বা ধুকধুকানি
- হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট
- অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা
- হাত-পায়ে ফোলাভাব
- মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
- তাছাড়া অনেক সময় সংক্রমণের মতো উপসর্গও দেখা যায়, যেমন:
- জ্বর ও কাঁপুনি
- রাতের ঘামে ভিজে যাওয়া
- ওজন হ্রাস
- গিঁটে ব্যথা
ঝুঁকির কারণগুলো কী কী?
হার্ট ক্যানসারের ঝুঁকি সাধারণত বয়স ও বংশগতির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এটি শিশু, নবজাতক এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যেতে পারে। দুর্বল রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ও জেনেটিক মিউটেশন বা ডিএনএ-তে ত্রুটির কারণেও ঝুঁকি বাড়তে পারে। বিশেষ করে যেসব শিশু টিউবরাস স্ক্লেরোসিস নামক জেনেটিক সিনড্রোমে আক্রান্ত, তাদের র্যাবডোমায়োমা নামক হৃদযন্ত্রের টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কীভাবে এটি শনাক্ত করা হয়?
হার্ট ক্যানসার খুবই বিরল হওয়ায় এবং এর লক্ষণগুলো অন্যান্য হৃদরোগের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় এটি শনাক্ত করা কঠিন। সাধারণত নিচের পরীক্ষাগুলো করা হয়:
- ইকোকার্ডিওগ্রাম (Echocardiogram): শব্দ তরঙ্গের মাধ্যমে হৃদপিণ্ডের গতিবিধি ও গঠন দেখা হয়।
- সিটি স্ক্যান (CT Scan): এটি দিয়ে টিউমারটি ক্যানসারাস নাকি নিরীহ, তা নির্ধারণে সহায়তা করা যায়।
- এমআরআই (MRI): টিউমারের আরও বিস্তারিত ছবি দিয়ে চিকিৎসকেরা টিউমারের ধরন নির্ণয় করতে পারেন।
চিকিৎসার পদ্ধতি কী?
হার্ট ক্যানসার চিকিৎসায় নিচের কয়েকটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়:
- সার্জারি: টিউমার অপসারণ করা হয়।
- রেডিয়েশন থেরাপি: টিউমার ছোট করতে সাহায্য করে।
- কেমোথেরাপি: ক্যানসার কোষ ধ্বংসে ও তাদের বৃদ্ধি ঠেকাতে ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
- হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট: জটিল ও অগ্রসর পর্যায়ের ক্ষেত্রে এটি একটি বিকল্প হতে পারে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র সাধারণ স্বাস্থ্য শিক্ষার উদ্দেশ্যে তৈরি। কোনো শারীরিক উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
রাকিব