
ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে পায়ে চুলকানি একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বর্ষাকাল বা অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার সময় এ সমস্যা বেড়ে যায়। চিকিৎসকদের মতে, পায়ে চুলকানি কখনো কখনো ত্বকের মারাত্মক রোগেরও পূর্বাভাস হতে পারে।
পায়ে চুলকানির সম্ভাব্য কারণ:
ফাঙ্গাল ইনফেকশন (দাদ বা রিংওয়ার্ম):
এটি সবচেয়ে সাধারণ কারণ। ছত্রাকের সংক্রমণে পায়ে গোল আকৃতির লালচে দাগ ও চুলকানি দেখা যায়।
ঘাম জমে থাকা:
বিশেষ করে মোজা বা বন্ধ জুতা পরার ফলে পায়ে ঘাম জমে থেকে ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়।
অ্যালার্জি বা এলার্জিক রিঅ্যাকশন:
নতুন জুতা, মোজা, সাবান বা ডিটারজেন্টে অ্যালার্জি হলে পায়ে চুলকানি দেখা দিতে পারে।
ড্রাই স্কিন বা শুষ্ক ত্বক:
পর্যাপ্ত আর্দ্রতা না পেলে ত্বক ফেটে যায় এবং চুলকায়।
সোরিয়াসিস বা একজিমা:
এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ত্বক সমস্যা, যেখানে ত্বকে লালচে চুলকানিময় আবরণ তৈরি হয়।
ডায়াবেটিস:
ডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে স্নায়ুজনিত সমস্যা বা সেকেন্ডারি ইনফেকশনের কারণে পায়ে চুলকানি হতে পারে।
চিকিৎসা ও প্রতিরোধ:
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা: প্রতিদিন পা ধুয়ে শুকিয়ে রাখা উচিত।
ফাঙ্গাল ইনফেকশনের জন্য অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম বা পাউডার: যেমন: ক্লোট্রিমাজল, মাইকোনাজল, বা টারবিনাফিন যুক্ত ওষুধ।
এলার্জি থাকলে অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে।
শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজার: বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করা কার্যকর।
খোলা জুতা পরা ও নিয়মিত মোজা পরিবর্তন: ঘাম কমাতে সহায়তা করে।
প্রয়োজনে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: বারবার সংক্রমণ হলে বা ঘা দেখা দিলে অবহেলা না করে চিকিৎসা নিতে হবে। নিজের ইচ্ছামতো স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ এতে ইনফেকশন লুকিয়ে যেতে পারে এবং পরে আরও জটিল রূপ নিতে পারে।
পায়ে চুলকানি সাধারণ সমস্যা হলেও, সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করলে তা বড় জটিলতায় রূপ নিতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ সমস্যা প্রতিরোধযোগ্য।
মিরাজ খান